ভাল ফলনের আশা জেলায়। নিজস্ব চিত্র
ফাল্গুন মাসের প্রথম থেকেই জেলার বিভিন্ন আমবাগানে গাছ ছেয়েছে মুকুলে। অনেক গাছে মাঘ মাসেই মুকুল এসেছে। এ বছর আবহাওয়া এখনও পর্যন্ত অনুকূল থাকায় ও আমের মুকুল দেখে ভাল ফলনের আশা করছেন জেলার আম চাষি ও বাগান মালিকেরা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে জেলায় এবছর বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। চাষিদের একাংশের মতে, গত বছর ছিল আমের শুখা মরসুম (অফ ইয়ার)। তবে এ বছর এখনও পর্যন্ত অকাল বৃষ্টি না হলেও ফাল্গুনের কুয়াশা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন চাষিদের একাংশ। কুয়াশা উধাও। চাষিরা বলছেন, এই কুয়াশার কারণে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকজনিত অসুখ, রোগ পোকার আক্রমণ বাড়ে। তা ছাড়া কুয়াশা, মেঘলা আবহাওয়া, বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকলে বা দিনের বিভিন্ন সময়, রাত্রে আবহাওয়া উষ্ণ থাকলে আমের সাদাগুঁড়ো রোগ দেখা দিতে পারে বলে মত উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞদের। এ ক্ষেত্রে আমগাছের কচিপাতা, ফুলের থোকা ও ডালের ডগায় সাদা গুঁড়ো রোগ দেখা যায়। এ ভাবে মুকুল নষ্ট হলে আমের ফলনও কমে যায়। তবে কুয়াশা উধাও হতেই ভাল ফলনের আশা করছেন চাষিরা। হরিহরপাড়ার শ্রীপুর গ্রামের এক আম চাষি মইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘গত বছর আমের ফলন ভাল হয়নি। এ বছর বাগানের প্রতিটি গাছ মুকুলে ছেয়েছে। গাছে গুটি আসতে শুরু করেছে। আশা করছি এ বছর আমের ভাল ফলন হবে।’’ উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞদের মতে, কুয়াশা, বাতাসে জলীয় বাষ্প, আপেক্ষিক আর্দ্রতা, উষ্ণতা বেশি থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগ, পোকার আক্রমণ বাড়ে। এক্ষেত্রে গাছের নিয়মিত পরিচর্যার পরামর্শ দিচ্ছেন উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞরা। সারগাছি ধান্যগঙ্গা কৃষি বিজ্ঞানকেন্দ্রের উদ্যানপালন দফতরের বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ চন্দা সাহা পারিয়া বলেন, ‘‘এ বছর আমের মুকুল খুব ভাল ফলেছে। বিভিন্ন কারণে রোগ-পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন মতো পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।’’
তবে মৌমাছি, উপকারী বা বন্ধু পোকা যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য সকাল আটটার আগে ও বিকেল চারটের পর কীটনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। জেলা উপ উদ্যানপালন অধিকর্তা প্রভাস মণ্ডল বলেন, ‘‘এ বছর আম চাষের অন-ইয়ার। মুকুল ভাল হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল আছে।’’ আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ বছর প্রায় এক লক্ষ ৭৫ হাজার টন আমের ফলন হতে পারে বলে মত তাঁর।