প্রতীকী ছবি
বছরখানেক আগে তিনটে ছাগল-ছানা কিনে বৎসরভর তাদের পালন করছিলেন ডোমকলের ঘোড়ামারার কোহিনূর বিবি। আশা ছিল, ইদের আগে চড়া দাম পাবেন ছাগলের। আর তা দিয়েই অনটনের সংসারের হাল ফেরাবেন। সেই চেনা অঙ্কে বাধ সাধল করোনা কিংবা লকডাউনের অনুশাসন। এ বছর ছাগল কেনার লোক নেই। বকরি ইদের আগে স্থানীয় বাজারে যে চাহিদাটা থাকে তাও এ বার নেই। কেবল কোহিনূর নয়, গ্রামগঞ্জের বহু অসহায় পরিবারের এই এমন আশায় এ বার জল ঢেলে দিয়েছে করোনা আবহ।
জলঙ্গির সাহেবরামপুর এলাকার মেহেরুন্নেসা বলছেন, ‘‘এক দিকে ছাগলের দাম নেই, অন্য দিকে টানা বর্ষা শুরু হয়েছে। ফলে ছাগলের খাবার নিয়ে পাগলের মত অবস্থা হয়েছে। ভেবেছিলাম তিনটে ছাগল বিক্রি করে হাজার পঞ্চাশেক টাকা হবে, আর তা দিয়েই মাথার উপরের টিনের চালাটা সারিয়ে নেব। কিন্তু তা আর হল কোথায়! বকরি ইদ মানেই ছাগলের দাম আকাশছোঁয়া। এই সময়টার দিকেই তাকিয়ে থাকেন বিক্রেতারা। এই সময়ে পাইকারেরা ঘনঘন ঘুরপাক খায় পাড়ায় পাড়ায়। তা ছাড়াও ভিন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকেরাও চড়া দামে ইদের আগে কিনে নেয় ছাগল। কিন্তু লকডাউনের বাজারে আনাজের দাম চড়চড় করে চড়লেও ছাগলের দাম কমে গিয়েছে অনেকটা।
ডোমকলের রায়পুর এলাকার কারিমন বিবি বলছেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে তিনটে ছাগলের বাচ্চা কিনে বছরভর তাদের পিছনেই ছুটে বেড়ালাম সারা বছর। ভেবেছিলাম হাজার ৫০ টাকা হবে তাতে সংসারের কিছুটা হলেও হাল ফিরবে। কিন্তু এখন যা অবস্থা সেই ছাগল নেওয়ার লোক নেই, অন্য বছর ইদের আগে যেভাবে ছাগলের চাহিদা থাকে সেটা এবার কিছুই নেই।’’