(বাঁ দিক থেকে) শোভাযাত্রা নিয়ে রাস্তায় লটারি জেতা পলাশ দত্ত। (ডান দিকে) পলাশ। —নিজস্ব চিত্র।
লটারির টিকিট কেটে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক নদিয়ার দিনমজুর। বিপুল টাকা হাতে পেয়ে প্রথমেই শুরু করলেন কালীপুজো। ২০৮ ঢাকিকে বায়না করে এলাকায় শোভাযাত্রা করে পুজোর আয়োজন করলেন পলাশ দত্ত। যুবকের কথায়, ‘‘সবই তাঁর ইচ্ছা। তিনি না চাইলে কার কী হত!’’
লটারি কেলেঙ্কারি নিয়ে সম্প্রতি কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার মধ্যে লটারির প্রাপ্তিযোগের কথা শুনে হাঁ হয়ে গিয়েছিলেন নদিয়ার তেহট্টের নাজিরপুরের বাসিন্দা পলাশ। এত টাকা জেতার পর কী হবে, এই আশঙ্কায় গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। লটারির টাকা পাওয়ার পর বাড়ি ফিরে একেবারে এলাহি ব্যবস্থার আয়োজন করলেন যুবক। প্রথমেই কালীপুজোর আয়োজন করেছেন। পুজোয় ঢাক বাজানোর জন্য নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং দুই চব্বিশ পরগনা থেকে ঢাকি এনেছেন। পাত পেড়ে ১০ হাজার মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। বস্তুত, পলাশের পুরস্কার প্রাপ্তিতে গোটা নাজিরপুর এলাকায় যেন উৎসবের আবহ।
মাসখানেক আগে লটারির টিকিট কাটেন পলাশ। প্রথম পুরস্কারমূল্য ছিল ১ কোটি টাকা। ওই যুবক জানাচ্ছেন, কখনও তিনিও আশাও করেননি যে প্রথম পুরস্কার তিনিই পাবেন। কিন্তু যখন শুনলেন কোটি টাকা তিনিই পেয়েছেন, তখন আনন্দের চেয়ে চিন্তা হচ্ছিল বেশি। নিরাপত্তার কথা ভেবে কিছু দিন বাড়ির বাইরে ছিলেন। যুবকের কথায়, ‘‘প্রতি দিন ১০০ থেকে ২০০ টাকা আয় করতে আমার মাথার ঘাম পায়ে পড়ে যায়। সেখানে মায়ের ইচ্ছায় আজ এক কোটি টাকা পেয়েছি! তাই মনে হল, এলাকার সমস্ত ঢাকিকে নিয়ে একটা পুজোর আয়োজন করি। সব তাঁর ইচ্ছায় হয়ে গেল।’’
পলাশের বাড়ির অনুষ্ঠান ঘিরে শনিবার সকাল এলাকায় উৎসবের পরিবেশ। নাজিরপুর বাঘা থেকে ছিটকা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা শোভাযাত্রা হয়। ‘অকাল উৎসব’ দেখতে রাস্তার দু’পাশে ভিড় করেন মানুষজন। নাজিপুর বাজারের বাজার কমিটির সম্পাদক নবকুমার সাহার মন্তব্য, ‘‘আগেও বেশ কয়েক জন লটারি জিতেছেন। এ ভাবে মানুষকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে কাউকে দেখিনি। আমরা সবাই খুশি।’’