পড়শিদের জটলা। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন শিথিল হতেই মুর্শিদাবাদে ফের চেনা গুলির শব্দ ফিরে এল।
ধুলিয়ান শহরের বুকে গাজিনগর পল্লিতে মঙ্গলবার রাতে বাড়ির পাশে জুয়া খেলা বন্ধ করতে বলায় প্রতিবাদী এক প্রৌঢ়কে রাত দুপুরে বাড়ি থেকে টেনে এনে গুলি করে ও ভোজালি দিয়ে কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। বাবাকে বাঁচাতে ছুটে এলে ছেলেকেও গুলি করে দুষ্কৃতীরা। চিৎকার ও গুলির শব্দে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় বাবা ও ছেলে দু’জনকেই স্থানীয় অনুপনগর গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা বাবাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাতেই পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ছেলেকে। মৃত ব্যক্তির নাম আনিকুল ইসলাম (৫০)। আহত হয়েছে তাঁর বড় ছেলে সহিদুল ইসলাম।
আনিকুল বিভিন্ন নির্মাণ কাজে শ্রমিক সরবরাহের ঠিকাদারি করতেন। ৬ ভাই। আনিকুল কয়েক বছর আগে আলাদা বাড়ি তৈরি করেন। তাঁর তিন মেয়ে ছোট, তিন ছেলে বাবার সঙ্গেই কাজ করে। গাজিনগর পল্লির বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বরাবরই একটু প্রতিবাদী স্বভাব ছিল আনিকুলের।
যে আমবাগানের মধ্যে বাড়ি তৈরি করেছিলেন আনিকুল, সেই বাগানে মদ, জুয়ার ঠেক বসে বলে অভিযোগ। মৃতের এক ছেলে মহম্মদ আলম বলছেন, “বাড়ির পাশেই জুয়ার আসর, মদ্যপদের চিৎকার নিয়ে বাবা বহুবার প্রতিবাদ করেছেন। এদিনও রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাবা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখেন সেখানে তখনও গ্রামের ৭-৮ জন মিলে জুয়া খেলছে। অনেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। বাবা তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বললে বচসা শুরু হয়। তার মধ্যেই একজন বাবাকে দেখে নেওয়ার শাসানি দেয়। বাবা অবশ্য সে সব গ্রাহ্য না করে বাড়িতে ঢুকে পড়েন।”
বাড়ির তিনটি ঘরের দুটিতে দুই ছেলে সস্ত্রীক শুয়ে পড়ে। অন্য ঘরে ছিলেন বাকিরা। আনিকুল শুয়েছুলেন বারান্দায়। মৃতার স্ত্রী আজলেমা বিবি বলেন, “আমিই দরজা খুলেছিলাম। গ্রামেরই কয়েক জন যুবক স্বামীকে গুলি করে। কোপায়। আমার এক ছেলেকেও খুনের চেষ্টা করে।’’
জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী জানান, গাজিনগরে গুলি করে খুনের তদন্ত শুরু হয়েছে। ৪ জন অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, জুয়ার ঠেক পুলিশ আগে ভাঙলে এমনটা হত না।