টিভি সারানোর দোকানের আড়ালে অস্ত্র কারখানা। নিজস্ব চিত্র।
অস্ত্র কারখানা চালানোর অভিযোগে মারগ্রাম থেকে গ্রেফতার মুর্শিদাবাদের যুবক। শনিবার মুর্শিদাবাদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর রবিবার বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয় ধৃতকে। বৃহস্পতিবার কিছু আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে মারগ্রাম থানার পুলিশ। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম মোরশেদ শেখ। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার শুনিয়া গ্রামে। অভিযুক্ত এলাকায় টিভি সারানোর দোকানের আড়ালে অস্ত্র কারখানা চালাতেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব অল্প বয়স থেকেই টিভি সারানোর কাজে পারদর্শী হয়ে ওঠেন মোরশেদ। কাজে হাত পাকিয়ে নিজেই টিভি সারানোর দোকান খোলেন। সেই মোরশেদের বাড়িতে বিপুল অস্ত্র-সহ কারখানার হদিস মেলায় স্তম্ভিত এলাকার মানুষ। তদন্তকারীদের দাবি, যন্ত্রবিদ্যার জ্ঞান কাজে লাগিয়ে অস্ত্র তৈরিতে পারদর্শী হয়ে ওঠেন মোরশেদ।
কিন্তু কী ভাবে সন্ধান পাওয়া গেল এই অস্ত্র কারখানার?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমের মুর্শিদাবাদ লাগোয়া এলাকায় বেশ কিছু বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের পর ধৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে স্থানীয় এক অস্ত্র কারবারির হদিস মেলে। সেই অস্ত্র কারবারিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে মোরশেদের নাম। এর পরেই ফাঁদ পাতে পুলিশ। মারগ্রামের এক অস্ত্র কারবারি মারফত মোরশেদের কাছে অস্ত্রের বরাত দেওয়া হয়। সেই অস্ত্র পৌঁছে দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে মোরশেদ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে তার টিভি সরাইয়ের দোকানের আড়ালে অস্ত্র কারখানা চালানোর কথা জানতে পারে পুলিশ। শনিবার মোরশেদকে সঙ্গে নিয়ে সেই অস্ত্র কারখানায় পৌঁছন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে উদ্ধার হয় দুটি দেশি বন্দুক ও অস্ত্র তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জাম।
মোরশেদের পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুরে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি মোরশেদ। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও হদিস না মেলায় হাসপাতাল, থানা ও মর্গে খোঁজ করা শুরু করে মোরশেদের পরিবার। শুক্রবার এক আইনজীবী মারফত মোরশেদের পরিবারকে জানানো হয় যে, তাঁকে মারগ্রাম থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত ব্যক্তির ভাই সইদ শেখের অভিযোগ, শাসকদলের এক প্রভাবশালী নেতা আর দুই অস্ত্র ব্যবসায়ী মিলে ফাঁসিয়েছেন তাঁর ভাইকে।
এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘তদন্ত করছে বীরভূম পুলিশ। তল্লাশি চালাতে আমাদের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। আমরা সাহায্য করেছি।’’