হাসপাতালের পথে। নিজস্ব চিত্র
এক প্রৌঢ়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আঙুল উঠল নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইনের দিকে। তেহট্টের ঘটনা। শম্ভু নাথ (৫৫) নামে মৃত ওই প্রৌঢ়ের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত সেই ভয়েই শনিবার তিনি আত্মহত্যা করেন বলে তাঁদের দাবি। এ নিয়ে শম্ভুর পরিবার মহকুমার শাসক ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভুর বাড়ি তেহট্টের নাটনার সোনাদহ পাড়ায়। সম্প্রতি নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপির প্রচারে তিনি আশঙ্কায় ভুগছিলেন বলে শম্ভুর পরিবারের দাবি। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে প্রসেনজিতের ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ডে নাম ঠিক থাকলেও রেশন কার্ডে ভুল নাম লেখা ছিল। এ নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন ওই প্রৌঢ়। প্রসেনজিৎকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হতে পারে, এই আশঙ্কা তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। কিছু দিন আগে নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিজেপির মিছিল হওয়ায় তাঁর চিন্তা আরও বেড়ে গিয়েছিল। প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘বাবা ভাবছিলেন, যদি আমার নামের বানান ঠিক না হয়, সে ক্ষেত্রে এনআরসির জন্য আমাকে দেশ ছাড়তে হবে।’’ শম্ভুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ বাড়ির গোয়ালঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা তাঁকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে শম্ভুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্ত। শম্ভুর পরিবার মহকুমার শাসক ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। তেহট্টের মহাকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত হবে।’’ বিজেপি নেতা অর্জুন বিশ্বাস এ নিয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি এনআরসি নিয়ে প্রচার করেনি, সিএএ নিয়েই শুধুমাত্র প্রচার হয়েছে। কারণ, এখনও পর্যন্ত এনআরসি নিয়ে কোনও বিল পাস হয়নি। সিএএ-র সঙ্গে এনআরসি-র মেলবন্ধন ঘটাচ্ছে তৃণমূল। এনআরসি আতঙ্ক তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী তারাই।’’