জনসভার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
জেলা সফরে এসে প্রতিটি বুথের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে গোটা জেলার বুথস্তরের দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করার নজির নেই বলে দাবি করছেন নদিয়া জেলার তৃণমূল নেতারা। অনেকেরই মত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট যে সহজ হবে না তা বুঝতে পেরেই বুথস্তরের কর্মীদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করতে এত বড় কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে একেবারে নীচের তলার তৃণমূল কর্মীদের উজ্জীবিত করতে দলের ‘সুপ্রিমো’ বার্তা দেবেন।
তৃণমূল ও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি রানাঘাটের হবিবপুরে জনসভা করবেন। রাতে থাকবেন কৃষ্ণনগরের সার্কিট হাউজে। পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমে কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজে কর্মিসভা করবেন। পরে রবীন্দ্রভবনে করবেন প্রশাসনিক বৈঠক। সেই বৈঠক নিয়ে যেমন প্রশাসনিক মহলে জোর প্রস্তুতি চলছে তেমনই কর্মী বৈঠক নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চলছে তৎপরতা।
নদিয়ায় কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় মোট চার হাজারের মতো বুথ আছে। প্রতিটি বুথ থেকে সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্য মিলিয়ে ১০ জনকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, প্রতিটি বুথে ১০টি করে কার্ড দেওয়া হবে। সেই কার্ড দেখালে তবেই কর্মিসভায় ঢুকতে দেওয়া হবে। সেই মত কর্মিসভায় ৪০ হাজারের বেশি চেয়ার রাখা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রায় শ’দুয়েক বাস ভাড়া করা হতে পারে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন। তবে কর্মীদের নিয়ে আসার বিষয়টি ব্লক নেতৃত্ব নিজের মতো করে আয়োজন করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী নদিয়া সফরে আসবেন সেটা বেশ কিছু দিন ধরেই দল ও প্রশাসনের অন্দরে শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এত দ্রুত চলে আসবেন তা সম্ভবত কেউই ভাবেননি। আর সেই কারণেই সরস্বতী পুজোর কল্যাণে পাওয়া টানা পাঁচ দিনের সরকারি ছুটিতে কৃষ্ণনগর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন বিভিন্ন দফতরে কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন শুনে গত বৃহস্পতিবার খবর পাওয়া মাত্রই তাঁরা ছুটির মাঝখানেই তড়িঘড়ি ডেলায় ফিরেছেন। মুখ্যমন্ত্রী দু’দিনের এই জেলা সফরে যেমন প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তেমনই জনসভা দলের কর্মী বৈঠকেও অংশ নেবেন বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে কৃষ্ণনগরের কাছে ভাতজাংলা মাঠে কর্মিসভা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেটা ছিল শুধু মাত্র কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের বুথস্তরের কর্মীদের নিয়ে। ওই দিন প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক শহরের রাস্তায় থাকবেন বলে তৃণমূল নেতারা দাবি করছেন। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ১০টি তোরণ তৈরি করা হচ্ছে। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা সাংসদ মহুয়া মৈত্র এখন কৃষ্ণনগরে নেই। তিনি দিল্লিতে বাজেট অধিবেশনে রয়েছেন। তবে আজই জেলায় ঢুকে যাচ্ছেন জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর নিয়ে তিনি এর আগেও জেলা নেতাদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছেন। এ বার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব তদারকি করবেন। রাজীববাবু বলেন, “বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে এই বৈঠক। প্রতিটা বুথ থেকে ১০ জন করে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। রানাঘাটের জনসভা সফল করার জন্যও আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত।”