হবিবপুরে প্রস্তুতি তৃণমূল কর্মীদের। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
সাত সকালে রানাঘাট রেল বাজার থেকে মাছ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন এলাকার এক তৃণমূল কর্মী। পথে দেখা দলের এক নেতার সঙ্গে। তাঁকে দেখেই ওই নেতা বলে ওঠেন, ‘‘মনে আছে তো।’’ উল্টো দিক থেকে উত্তর আসে, ‘‘আছে। সময় মতো চলে যাব।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জনসভার আগের দিন, সোমবার জোর তৎপরতা চোখে পড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এ দিনের সভায় যাতে জমায়েত বেশি হয়, তা নিশ্চিত করতে আগে থেকেই ময়দানে নেমেছে তৃণমূল। দলে শহর ভিত্তিক সভা তো হয়েছে। এমন কি বিভিন্ন ওয়ার্ডেও সভা করেছে তৃণমূল। সোমবার বিকেলে পুরসভার কনফারেন্স রুমে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। রানাঘাট পুরসভার পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়, শহর তৃণমূলের সভাপতি অসিত দত্ত, কার্যকরী সভাপতি পিন্টু সরকার-সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, যাতে মঙ্গলবার ছাতিমতলার জনসভা এবং বুধবার কৃষ্ণনগরের কর্মিসভায় ভাল জমায়েত হয়।
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে দলীয় কর্মীরা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে তৃণমূলের কার্যালয় ‘বিনয় ভবন’-এ জড়ো হবেন। সেখান থেকে তাঁরা বিভিন্ন গাড়িতে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে হবিবপুর ছাতিমতলার মাঠে পৌঁছবেন। একই ভাবে সভা শেষে সেখান থেকে ফিরে আসবেন। এবার দলের লক্ষ্য, শহর থেকে ওই সভায় তিন হাজার লোক নিয়ে যাওয়া। দলের অনেকে মনে করছেন, শহরের সর্বত্র যেভাবে সাড়া পাওয়া যাছে, তাতে লোক আরও বেশি হতে পারে।
এর আগে এই মাঠে সভা করতে এসেছিলেন মমতা। তবে পুর নির্বাচনের জন্য আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে এ বারের সভা। দলের এক কর্মীর কথায়, ‘‘সামনে পুরসভা নির্বাচন। শহরের অন্য পুরসভার সঙ্গে এখানেও নির্বাচন হতে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল মোটেও ভাল হয়নি। শহরের ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটিতে কোনও রকমে মুখরক্ষা হয়েছিল।’’ তাঁর বক্তব্য, সেই সময় অস্বস্তি ঢাকতে বিজেপি ঝড়ের কথা বলা হয়েছিল। এবার প্রকৃত শক্তি পরীক্ষা। অনেকের মনেই ঘুরছে প্রশ্নটা। মানুষ কি তৃণমূলের সঙ্গে আছেন? না কি বিজেপির দিকে চলে গিয়েছেন? মনে করা হচ্ছে, পুরসভা ভোটের কঠিন পরীক্ষার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই সভা এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে।
রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ওয়ার্ম আপ অনেক দিন আগেই হয়ে গিয়েছে। লোকসভায় কী হয়েছে, সেটা বড় কথা নয়। পুরসভা নির্বাচনে বিজেপি আমাদের শহরে কিছু করতে পারবে না।” রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উপনির্বাচনে তৃণমূল ভাল ফল করেছিল। মানুষ বুঝতে পেরেছে, নাগরিকত্ব আইন তাদের মঙ্গলের জন্য। মানুষ এখন আমাদের সঙ্গে রয়েছে। এ সব ওয়ার্ম আপ করে কিছু হবে না।”