মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পরাজিত এলাকায় দলের নেতাদের বাড়ি বাড়ি যেতে বললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার ‘শহিদ সমাবেশ’ থেকে তিনি বলেছেন, ‘‘মনে রাখতে হবে শরীরটাকে যত নাড়াবেন, যত হাঁটবেন, আপনার মাথা তত হাঁটবে। খেলাধুলা যত করবেন মানসিক শক্তি তত বাড়বে। আপনার শারীরিক শক্তি বাড়বে। তৃণমূল করতে গেলে আমাদের সবটাই চাই। সব মানুষকে নিয়ে, সব জেলাকে নিয়ে সব ব্লককে নিয়ে। যেখানে যেখানে জিতেছেন ভাল করে গিয়ে মানুষকে ধন্যবাদ জানাবেন। তাঁদের বাকি কাজ কী আছে, সেটা করবেন। যেটা করতে পারবেন না, দলকে জানাবেন। আর যেখানে আমরা জয়ী হইনি সেখানে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বলবেন আমাদের ক্ষমা করবেন। হয়তো আপনাদের বিশ্বাসযোগ্যতায় আমাদের কোনও খামতি ছিল। আগামী দিন যাতে না হয় আমরা দেখব। আমাদের আশীর্বাদ রাখবেন।’’ এ ভাবেই দলনেত্রী দলের নেতাকর্মীদের পরাজিত এলাকায় বাড়ি বাড়ি কার্যত ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে ওই এলাকার লোকজনকে তৃণমূলমুখী করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তৃণমূল নেত্রী দলের নেতানেত্রীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘মনে রাখবেন গাড়িতে ঘোরার থেকে পায়ে হেঁটে ঘোরা ভাল। তাতে শরীর ভাল থাকে, মন ভাল থাকে। বড় বড় গাড়িতে ঘোরার থেকে স্কুটারে ঘোরা ভাল, সাইকেলে ঘোরা ভাল। আমি কেন সবুজসাথীর সাইকেল দিই? কারণ তারা যেন স্কুলে যেতে পারে, কলেজে যেতে পারে, বাজারে যেতে পারে। মনটাকে চিরসবুজ রাখতে পারে।’’
যা শুনে দলের অনেকেই বলছেন, এখন তৃণমূলের নেতাদের একটা বড় অংশের কালো কাচ ঘেরা গাড়ি ছাড়া চলে না। যার জেরে জনসংযোগও কমেছে। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, ব্লক ও জেলা স্তরের নেতাদের একটা বড় অংশ চার চাকার গাড়িতে ঘুরে বেড়ান। এলাকার মানুষ সহজে তাঁদের কাছে ঘেঁষতে পারেন না। নেত্রী সেই অংশকে লক্ষ্য করে হয়তো এমন মন্তব্য করেছেন।
তবে রবিবার কলকাতার সমাবেশ শেষে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘সে তো আমরা বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া শুরু করেছি। আমাদের ভুলভ্রান্তি থাকলে বা আচার আচরণ, ব্যবহারের কোনও খামতি থাকলে সেগুলো ঠিক করতে হবে বলে মাইকে প্রকাশ্যে মঞ্চে বলেছি। দিদি যে কথা বলেছেন বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা বলেছেন এক জন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি তার সঙ্গে ১০০ শতাংশ সহমত। প্রত্যেকটি তৃণমূল কর্মী, নেতা বা জনপ্রতিনিধি আগামী দিন তা মেনে চলবেন। তার অন্যথা হলে নির্দিষ্ট জায়গায় জানিয়ে দেওয়া হবে।’’