মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুপুরবেলা শান্তিপুরে বাজারের মধ্যে এক জুয়ার ঠেকে তৃণমূল কর্মী শান্তনু মাহাতোর খুন হওয়াকে ‘খুব খারাপ ঘটনা’ বলে কড়া নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া প্রতিক্রিয়া ছিল—‘‘শান্তিপুরে যে খুনের ঘটনা ঘটেছে ভেরি ব্যাড। পুলিশকে বলেছি কড়া ব্যবস্থা নিতে।’’ তিনি যখন এই কথা বলছেন তখন সেখানে উপস্থিত শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য, ঘটনাচক্রে যিনি নিজে ওই খুনের ঘটনার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে অভিযুক্ত। খুনের এত দিন পরেও তাঁকে পুলিশ ডেকে জেরা না-করায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার হবিবপুরের সভাতেও অরিন্দম উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ জানুয়ারি দুপুরে শান্তিপুরের বড়বাজার এলাকায় জুয়ার ঠেকে খুন হয়ে যান শান্তনু মাহাতো ওরফে গনা। তাঁকে তৃণমূল সমর্থক বলেই দাবি করেছেন গনার পরিবার এবং শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে। নিহত গনা প্রথম থেকেই অজয় দে-র অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। আবার অজয়ের সঙ্গে অরিন্দমের মতবিরোধ সব মহলে সুবিদিত। ফলে গনা খুনে অরিন্দমের নাম জড়ানোয় শান্তিপুরে তৃণমূলের অন্দরের সমীকরণ আরও জটিল হয়েছে।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ দিন বিধায়ক অরিন্দম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রতিক্রিয়া জানানোর ধৃষ্টতা আমার নেই।’’ আর পুরপ্রধান অজয় দে বলেন, “এই বিষয়ে যা বলার মুখ্যমন্ত্রী বলে গিয়েছেন।’’
এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে নাম রয়েছে শান্তিপুরের বাগআঁচড়া হাইস্কুলের শিক্ষক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা কুমারেশ চক্রবর্তী, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আনোয়ার হোসেন-সহ ১১জনের। এঁরা প্রত্যেকেই বিধায়ক অরিন্দমের-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তালিকায় নাম থাকা ১১ জনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত তালিকার বাইরে থাকা দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যতম অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আনোয়ারকে গ্রেফতার করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরতে হয় পুলিশকে। এখনও ফেরার আনোয়ার। বাকি অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে।