ডোমকলে তোলাবাজি, সিলমোহর দলনেত্রীর

বিরোধীরা দাবি করেছেন, কোথাও ইশারায়, কোথাও আবার সরাসরি হাত পাতা হচ্ছিল সরকারি প্রকল্পের নামে। ডোমকলে এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল দস্তুর।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস ও সামসুদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০২:০১
Share:

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

পঞ্চায়েত হোক বা পুরসভা, সুরাহার খোঁজে পা দিলেই— ‘ফেল কড়ি মাখো তেল!’ অভিযোগটা অনেক দিন ধরেই করে আসছিলেন বিরোধীরা। এ বার সেই অভিযোগে সিলমোহর দিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী। দলের পুরপ্রধান ও কাউন্সিলরদের তলব করে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তোলাবাজি’ নৈব নৈব চ! এমনকি নির্দেশও জারি হয়েছে, যারা টাকা আদায় করেছেন, ফিরিয়ে দিতে হবে তা।

Advertisement

সেই তালিকায় প্রচ্ছন্ন ভাবে উঠে এসেছে ডোমকলের নামও। বিরোধীরা দাবি করেছেন, কোথাও ইশারায়, কোথাও আবার সরাসরি হাত পাতা হচ্ছিল সরকারি প্রকল্পের নামে। ডোমকলে এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল দস্তুর। সরকারি যে কোনও প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে আম আদমিকে ফেলতে হবে কড়ি। এমনকি পঞ্চায়েতের শংসাপত্র নিতে গেলেও এখন না কি কড়ি না ফেললে হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের।

মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চের বৈঠকে ডোমকলের পুরপ্রধানকে ডেকে তাই মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, ‘‘সৌমিক তোমার ওখানে ভাল কাজ হচ্ছে না। খুন জখমের ঘটনাও বড্ড বেড়ে গিয়েছে। এ ভাবে চলবে না।’’

Advertisement

ডোমকলের উপ পুর প্রধান প্রদীপ চাকি বলেন, ‘‘দিদি নজরুল মঞ্চের সভায় বলেন, ‘ডোমকল নিয়ে আমার কাছে অনেক অভিযোগ আছে। মানুষের কাছে টাকা নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে হবে।’’ পুরপ্রধান সৌমিক অবশ্য বলেন, ‘‘তোলাবাজি নিয়ে আমাকে মোটেই সতর্ক করেননি দলনেত্রী। কুচিয়ামোড়ার খুন নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, আমি বলেছি, ওটা ঘটেছে ডোমকল পুর এলাকার বাইরে।’’

নজরুল মঞ্চের মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন না কেন, তাতে অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের মন গলছে না। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত থেকে পুরসভায় পা ফেললেই এখন কাট মানি দিতে হয়। সে ঠিকাদার হোক বা সাধারণ মানুষ, রক্ষে নেই কারও! সরকারি প্রকল্পের নামে কাউন্সিলররা লক্ষ লক্ষ টাকা তোলাবাজি করছেন। সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা মত যদি টাকা ফেরত দিতে হয়, তাহলে ডোমকলে আরও একটা দফতর খুলতে হবে। যে ভাবে টাকা তোলা হয়েছে তা ফেরত দিতে গেলে বছর খানেক সময় লাগবে।’’

নজরুল মঞ্চে অবশ্য দেখা যায়নি বহরমপুর পুরসভার প্রধান কিংবা কাউন্সিলরদের। কেন?

প্রশাসকের অধীনে থাকা ওই পুরসভার প্রাক্তন পুর-প্রধান নীলরতন আঢ্যের উত্তরে স্পষ্ট ক্ষোভ, ‘‘জেলা সভাপতি আমাদের ওই সভায় যেতে বারণ করেছেন। আমরা অত্যন্ত অপমানিত হয়েছি।’’ দলীয় সূত্রে খবর, দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশেই তাহের ওই নির্দেশ জারি করেছিলেন। তবে তা নিয়ে দলের অন্দরেই মুখ বার হয়েছে অনেকের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement