Mahua Moitra

কলেজে মারামারি বরদাস্ত করব না, করিমপুরের গোষ্ঠী বিবাদ নিয়ে ফেসবুকে হুঁশিয়ারি মহুয়া মৈত্রের

পান্নাদেবী কলেজে পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে রয়েছেন মহুয়া। তাঁর হুঁশিয়ারি, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ যদি অবিলম্বে না থামে, কড়া পদক্ষেপ করা হবে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৫৩
Share:

ফেসবুকে হুঁশিয়ারি মহুয়ার।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মারামারির জায়গা নয়। সেখানে এমন ঘটনা ঘটলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেছেন মহুয়া, নদিয়ার করিমপুরের সেই পান্নাদেবী কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তিনি নিজে। ওই কলেজে গন্ডগোল প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন মহুয়া। ওই কলেজে দুই বিবদমান গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে কৃষ্ণনগরের সাংসদের মন্তব্য, কলেজ শিক্ষার মন্দির। মারামারি করার জায়গা নয়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ যদি অবিলম্বে না থামে, কড়া পদক্ষেপ করা হবে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে।

Advertisement

স্থানীয়দের দাবি, শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলেজ চত্বর। গত বৃহস্পতিবারও উপর থেকে জল ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা বাধে। কলেজ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সেই বিবাদ মিটেও যায়। কিন্তু গত সপ্তাহের ঘটনার রেশ ধরে সোমবার আবার দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তা নিয়ে সোমবার বিকেলে ফেসবুক লাইভে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহুয়া। তিনি বলেন, ‘‘পান্নাদেবী কলেজে গত সপ্তাহে জল ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পড়ুয়াদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তখন আমরা থানাপুলিশ করিনি। কারণ, এটা কলেজের ভিতরের ঘটনা। আর এঁরা সকলেই পড়ুয়া। আমরা চেয়েছিলাম, কলেজ নিজের মতো করে তদন্ত করে যা পদক্ষেপ করার করবে। সেই মতো তদন্তও চলছে। এর মধ্যেই কিছু ক্ষণ আগে (সোমবার) আবার দু’পক্ষের ছাত্রদের মধ্যে হাতাহাতি, মারপিট হয়েছে। আহতও হয়েছেন কেউ কেউ। এটা লজ্জাজনক ঘটনা।’’

ভবিষ্যতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলার কারণে কলেজ চত্বর উত্তপ্ত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মহুয়া। লাইভে তিনি বলেছেন, ‘‘তোমাদের বাবা, মা এখানে পড়াশোনা করার জন্য পাঠান। তোমাদের আগামী দিনে পথ দেখানোর কথা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তোমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে হাতাহাতি করছে! এর থেকে লজ্জার কিছু হয় না। পরবর্তী কালে এ রকম কিছু ঘটলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। যা যা ভিডিয়ো আছে, পরের বার আমি ফেসবুকে দিয়ে দেব। যাতে তোমাদের বাবা, মা-ও জানতে পারেন, তাদের ছেলে কলেজে গিয়ে পড়াশোনা না করে মারপিট করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এই কলেজের আবহাওয়াকে আপনারা দূষিত করবেন না।’’

Advertisement

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৌস্তুভ ভট্টাচার্যও জানান, ‘‘আগের সপ্তাহের ঘটনার তদন্ত চলছে। আজকের ঘটনারও যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে প্রথম বার করিমপুর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন মহুয়া। ২০১৯ সালে তৃণমূল তাঁকে কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে প্রার্থী করে। ভোটে জিতে নিজের বিধায়কপদ ছেড়েও দেন মহুয়া। বর্তমানে করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের বুথকর্মী সম্মেলনে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, কৃষ্ণনগরের সাংসদকে তাঁর নিজের লোকসভা এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘করিমপুর আর মহুয়ার জায়গা নয়। ওটা আবু তাহের (মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান)-র জায়গা। উনি দেখে নেবেন। তুমি তোমার লোকসভা নিয়ে থাকো।’’

তার পরেও মহুয়া কেন করিমপুরের বিষয় নিয়ে সরব হলেন, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও মহুয়ার ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, সাংসদ আদতে করিমপুরের বাসিন্দা। সেখানকার ভোটার তিনি। আর তা ছাড়া, মহুয়া ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। তাই, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না, তা দেখবার দায়িত্ব তাঁরও। সেই কারণেই কড়া বার্তা দিতে হয়েছে মহুয়াকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement