ছবি সংগৃহীত
২৩ মার্চ শেষবারের মতো খুলেছিল তাঁর মন্দির। এত দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলতে চলেছে নবদ্বীপের ধামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরের সিংহ দরজা। আগামী ২৩ জুন, রথযাত্রার দিন ফের ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে চৈতন্যধামের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ মহাপ্রভু মন্দির। রবিবার মহাপ্রভু মন্দির পরিচালন সমিতির বিশেষ সভায় দীর্ঘ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপে লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই বন্ধ ছিল মহাপ্রভু মন্দির দরজা। শুধু মহাপ্রভু মন্দির বলে নয় মন্দিরময় নবদ্বীপের কমবেশি দেড়শ মন্দিরের অধিকাংশই এখনও বন্ধ। হাতেগোনা দু’একটি মন্দির ছাড়া আনলক পর্বে কোনও মন্দির ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি। একই ছবি মায়াপুর ইসকনের মন্দিরেরও। আনলক পর্ব শুরু হতেই ভক্তরা উৎসুক হয়ে পড়েছিলেন কবে খুলবে মহাপ্রভু মন্দির। প্রতি দিনই বহু মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছিল মন্দির কর্তৃপক্ষকে। এই অবস্থায় এ দিন মহাপ্রভু মন্দিরের পরিচালন সমিতি এক বিশেষ সভায় বসেছিল। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী রথযাত্রার দিন থেকে খুলে দেওয়া হবে মহাপ্রভু মন্দির।
মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন ভাবে মন্দির খোলার পর বদলে যাচ্ছে অনেক নিয়মকানুন। এ দিনের আলোচনায় মন্দির খোলার জন্য সুনির্দিষ্ট কতগুলি নিয়ম বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্দির পরিচালন সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, “স্বয়ং বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী এই মন্দিরে পূজিত বিগ্রহের সেবা করতেন। সুতরাং ভক্তদের কাছে ধামেশ্বরের আকর্ষণ বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন মহাপ্রভুর দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া উচিত বলেই আমরা মনে করছি। তবে যাবতীয় সামাজিক দূরত্ব এবং বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে আগামী দিনে মন্দিরের প্রবেশ করতে হবে।”
সাবান দিয়ে হাত এবং পা ধুয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে। মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। মূল ফটকে থাকবে ফিভার গান দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা। মন্দিরে প্রবেশের আগে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দেওয়া স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুয়ে ভিতরে ঢোকা যাবে। মন্দিরের ভিতরে বসা, মালাগাঁথা, দলবেঁধে কীর্তন করা যাবে না। ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করবেন, মহাপ্রভুকে দর্শন করে অন্য পথ দিয়ে আবার বেরিয়ে যাবেন। মন্দির পরিচালন সমিতির সহ-সম্পাদক সুদিন গোস্বামী বলেন, “ভক্তরা ধৈর্য রাখতে পারছিলেন না। বহু মানুষ আছেন, যাঁরা প্রতিদিন মহাপ্রভুর দর্শন করেন। প্রায় তিন মাস ধরে সে সব বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ভক্তদের প্রবেশের জন্য যে স্বাস্থ্যবিধি মানা দরকার সেই পরিকাঠামো আমাদের ছিল না। সেটা সম্পূর্ণ করে তবেই মন্দির খোলা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, একবারে ২৫ জনের বেশি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
স্থানীয় পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন পর মহাপ্রভু মন্দির খোলা হচ্ছে। তাই তার আগে গোটা মন্দির স্যানিটাইজ় করা হবে। রথযাত্রার দিন বিশেষ ভাবে সাজানো হবে মহাপ্রভু মন্দির।