পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছলেন না কোনও স্বাস্থ্যকর্মী। — ফাইল চিত্র।
কোনও রকম চিকিৎসা দল ছাড়াই পরীক্ষা দিতে হল জেলার কয়েকশো মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে। জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার সময় পৌঁছলেন না কোনও স্বাস্থ্যকর্মী। আশাকর্মীদেরও দেখা মিলল না। বিষয়টি সামনে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ছিল নবদ্বীপে। সেখানে কোনও স্কুলে স্বাস্থ্যকর্মী দিতে পারেননি নবদ্বীপ পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
মাধ্যমিকের প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন চিকিৎসা দল থাকার কথা। ন্যূনতম অন্তত দু’জন করে আশাকর্মী থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শুরু হতে দেখা গেল, অনেক স্কুলেই চিকিৎসা দলের ব্যবস্থা করা হয়নি। ধুবুলিয়া সাতটি স্কুল ও নবদ্বীপ পুরসভা এলাকার আটটি স্কুলে কোনও স্বাস্থ্য কর্মী বা চিকিৎসা দল এ দিন ছিল না।
গোটা বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা আহ্বায়ক সুব্রত ঘোষ বলেন, “কারণ যাই হোক না কেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে মেডিক্যাল টিম না থাকাটা একেবারেই মানা যাচ্ছে না। যদি এ দিন ওই স্কুলগুলির কোনও একটিতে কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ত তখন কী হত? আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলছেন, “এই ধরনের আচরণ ক্ষমা করা হবে না। যাঁরা ডিউটিতে যাননি তাঁদেকে শো-কজ করা হবে। স্বাস্থ্য ভবনকেও জানানো হবে।”
কেন এমনটা হল?
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আশাকর্মীদের সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়ন’ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে, তাদের সদস্যেরা বিনা পারিশ্রমিকে পরীক্ষার ডিউটি করবেন না। বৃহস্পতিবার ধুবুলিয়ার সাতটি স্কুলেই ডিউটি বয়কটকরেন আশাকর্মীরা।
কৃষ্ণনগর-২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাতী মুখোপাধ্যায় বলেন, “আন্দোলনের কারণে আশা কর্মীরা ডিউটি করেননি। এর পর থেকে এএনএম-রা ডিউটি করবেন।”
নবদ্বীপ শহরে আটটি স্কুলের মধ্যে কোনওটিতেই এ দিন কোনও স্বাস্থ্যকর্মীকে পাঠানো হয়নি। স্কুল দফতরের নবদ্বীপ উত্তর সার্কেল ইনেস্পেক্টর জানবাস শেখ বলেন, ‘‘আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকেই বিষয়টি জানিয়েছিলাম।”
এখানে অবশ্য কারণটা আলাদা। নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার বাপ্পা ঢালি বলেন, ‘‘এটা নিয়ে যা বলার পুরসভা বলবে।” জানা যাচ্ছে, পুরসভা কোনও স্বাস্থ্যকর্মী পাঠায়নি। নবদ্বীপ পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের বিমান সাহা প্রথমে দাবি করেন যে, কিছু কিছু সেন্টারে স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়েছেন। পরে অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসা দল যায়নি সেই বিষয়টি পরে জেনেছি। আসলে পুরসভার পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী ছিল না।”