নিজেদের উদ্যোগেই মাদ্রাসা সংস্কার হরিহরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।
করোনা আবহে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো আজ থেকে খুলছে স্কুল, কলেজের দরজা। হাইস্কুল, হাইমাদ্রাসা গুলিতে নির্দেশিকা মেনে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু হবে। বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসার তরফে জানা গিয়েছে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক স্কুল চত্বরে জন্মেছে আগাছা। ভেঙেছে শৌচাগারের দরজা, অনেক ক্লাস রুমের দরজা, জানালা, বিকল হয়েছে পাইপ লাইন, জলের কলও। স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি নষ্ট আসবাবপত্র মেরামতের জন্য জেলার বিভিন্ন স্কুলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে টাকা। বিভিন্ন স্কুলের চাহিদা মতো একেকটি স্কুলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তিন থেকে প্রায় পৌনে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে জেলার ৩৮৮ টি হাইস্কুল ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় তিন কোটি ৩৪ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। তবে একই পাঠক্রম ও সমমানের মাদ্রাসার গুলির জন্য এখনও পর্যন্ত একটি টাকাও বরাদ্দ হয়নি বলে অভিযোগ মাদ্রাসা গুলির। তবে সংস্কারের কাজ তো দূর অস্ত স্যানিটাইজ় করবেন কী করে তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন সরকার পোষিত মাদ্রাসা গুলি।
জেলায় সরকার পোষিত মাদ্রাসার সংখ্যা ১০৪। দফতর থেকে টাকা বরাদ্দ না হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষগুলি নিজেরাই মাদ্রাসা খোলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন আধিকারিক (ডোমা) বাপ্পা গোস্বামী বলেন, ‘‘বিডিওদের বলা হয়েছে মাদ্রাসা গুলি স্যানিটাইজ় করার জন্য। তা ছাড়া মাদ্রাসাগুলির কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে।’’
মাদ্রাসাগুলির জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর অর্থ বরাদ্দ করবে বলে মত অভিজ্ঞ মহলের। তবে জেলার একাধিক ব্লকের মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্যানিটাইজ় করতে উদ্যোগী হয়নি ব্লক প্রশাসন।
একাধিক ব্লকের বিডিওরা বলছেন, ‘‘ব্লক প্রশাসনের তহবিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা না থাকার কারণেই মাদ্রাসাগুলির সংস্কারের কাজ করা যায়নি।’’ রানিনগর ১ ব্লকের নশিপুর হাইমাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসনের তরফে স্যানিটাইজ় করার কোনও উদ্যোগ হয়নি। সংক্রমণের ভয়ে মাদ্রাসা উন্নয়ন তহবিলের টাকাতেই স্যানিটাইজ় সহ অন্যান্য কাজকর্ম করা হয়েছে।’’ রানিনগর ২ ব্লকের আমিরাবাদ হাইমাদ্রাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদ্রাসার অনেক দরজা, জানালা, চেয়ার, বেঞ্চ, শৌচাগারের দরজার ক্ষতি হয়েছে।
মাদ্রাসার কম্পোজ়িট গ্রান্ট-এর টাকায় মাদ্রাসা খোলার মত পরিবেশ, পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান ওই মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মল্লিক। হরিহরপাড়ার গোবরগাড়া হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বকুল আহম্মেদ বলেন, ‘‘আমরা নিজেদের উদ্যোগেই স্যানিটাইজ় করেছি। বাকি কাজ আমরা মাদ্রাসার উন্নয়ন তহবিলের টাকাতেই করেছি।’’ তবে ঠিক মত স্যানিটাইজ় করা না হলে সংক্রমণের ভয়ও করছেন একাংশের মাদ্রাসা শিক্ষকেরা। অনেক মাদ্রাসা মাদ্রাসা সংস্কার, আসবাবপত্র মেরামতের জন্য তাকিয়ে রয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের অর্থ বরাদ্দের দিকেই।