আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মাদ্রাসায় ঢুকে শিক্ষকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার রানিনগরের কুমনগর হাই মাদ্রাসার ঘটনা। শিক্ষকদের দাবি, মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির ভোটে সব কটি আসনে জেতে তৃণমূল। কিন্তু, তারপরেও পরিচালন সমিতি গঠনের জন্য পঞ্চায়েত প্রতিনিধির পাঠানো হয়নি। ফলে সমিতি গঠন করা যায়নি। বিষয়টি মাদ্রাসা বোর্ডে চিঠি লিখে জানান প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম। আর তাতেই রেগে যান এলাকার তৃণমূল নেতারা।
অভিযোগ, শনিবার মাদ্রাসায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও চড়াও হয় রানিনগর ব্লকের যুব সভাপতি মিজান হাসান ও তার দলবল। রানিনগর থানায় এই মর্মে লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে মিজান হাসানের দাবি, ‘‘আদতে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক রাজনীতির খেলায় মেতেছেন। ১১ অগস্ট পঞ্চায়েত সমিতি তাদের প্রতিনিধি হিসেবে আমার নাম পাঠায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তা নিতে অস্বীকার করেন। শিক্ষকদের উপরে আক্রমণ হয়নি। তিনি নাটক করছেন।’’
১০ জুলাই ওই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়। সব আসনেই জেতে শাসকদল। এরপর মাদ্রাসার তরফে পঞ্চায়েত প্রতিনিধির নাম চেয়ে আবেদন করা হয়। ১৫ জুলাই সরকারি প্রতিনিধির নাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বার তিনেক মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ প়ঞ্চায়েতের প্রতিনিধির নাম চেয়ে চিঠি পাঠান। কোনও উত্তর না মেলায় মাদ্রাসার পক্ষে বিষয়টি বোর্ডে জানানো হয়। প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের দাবি, ‘‘আর তাতেই এলাকার তৃণমূল নেতা মিজান হাসান দলবল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এমনকী পুলিশের সামনেই সোমবার আমাদের গলা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ফলে সোমবার আমরা স্কুলে যাব না। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের সামনে ধর্ণা দেব।’’অন্য দিকে সোমবার থেকে ওই মাদ্রাসায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার কী হবে, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি কারও কাছে। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, স্কুলে যাওয়ার মতো কোনও পরিবেশ নেই। প্রায় সময় নানা আবদার নিয়ে হাজির হচ্ছে তৃণমূলের ওই নেতা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, একদিকে পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা নিয়ে ডামাডোল আর অন্যদিকে কে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি হবে তা নিয়ে দলের অন্দরেই তৈরি হয় গণ্ডগোল। ফলে ওই প্রতিনিধির নাম এখনও মাদ্রাসায় পৌঁছয়নি। আর তাতেই তৈরি হয় এই পরিস্থিতি। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে মিজান হাসান-সহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককেও জানানো হয়েছে।