পরীক্ষার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
অদম্য মনোবলকে ভর করে ৩০ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছেন সখিনা। প্রায় চার বছর ধরে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে হরিহরপাড়ার চোঁয়া এলাকায় এক ব্রাহ্মণ পরিবারে বসবাস করছেন তিনি। চোঁয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার বাবার বাড়ি জলঙ্গিতে।
পরিবার সূত্রে খবর, ছোট বেলায় প্রতিটি শ্রেণিতে পরীক্ষার পর প্রথম দিকেই স্থান দখল করতেন তিনি। তবে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন মাত্র তেরো বছর বয়সে চোঁয়া এলাকায় এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন পরিবারের লোকেরা। বিয়ের পরও প্রায় দেড় বছর পড়াশোনা করেন তিনি। জলঙ্গি বালিকা বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেও তারপর তাঁর পড়াশোনা আর এগোয়নি। সখিনার ১৪ বছর বয়সী ছেলে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সাড়ে চার বছরের মেয়েকে এ বছর একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রায় চার বছর আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছাড়েন সখিনা। এলাকার এক বান্ধবী কাকলি রায়চৌধুরী তাঁকে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দেন। তখন থেকে গ্রামেরই এক ব্রাহ্মণ দম্পতি সুভাস রায়চৌধুরী ও ইলা রায়চৌধুরী তাকে মেয়ের মতোই দেখভাল করেন।
সেই বাড়িতে থেকেই রোজা, ইদ, শবেবরাত পালন করেন সখিনা। প্রায় ১৫ বছর বইখাতার সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ছিল না। তবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য জেদের বসে প্রায় দু’বছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা মাথায় আসে তাঁর। এলাকার সমাজকর্মী পূর্ণিমা সরকারের প্রচেষ্টায় ২০২১ সালের গোড়ায় চোঁয়া বিবি পাল বিদ্যানিকেতনে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এখন মাধ্যমিক পাশ করার পর উচ্চমাধ্যমিকও পাশ করতে চান সখিনা। তাঁর স্বপ্ন সেবিকা হওয়া।