উধাও পদ্ম। রয়েছে শুধু ডাঁটি। (ইনসেটে) সেই পদ্ম— নিজস্ব চিত্র।
পদ্মে লক্ষ্মী তুষ্ট হলেও রুষ্ট হতে পারেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আশঙ্কা থেকে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনের সামনের কৃত্তিম জলাশয় থেকে তুলে ফেলা হল ফোটা পদ্মফুল। বৃষ্টি ভেজা রবিবারে এ নিয়ে কানাঘুসোর অন্ত রইল না বহরমপুরে।
আর এক দিন বাদেই, আগামীকাল মঙ্গলবার বহরমপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সফর উপলক্ষে রবীন্দ্রভবনের দেওয়াল রাঙানো হচ্ছে নীল-সাদা রঙে। ভবনের প্রবেশ পথের ডান দিকে দণ্ডায়মান রবীন্দ্রমূর্তির পাদদেশে পুরানো মোজাইক করা দেওয়ালেও চলছে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের রঙে রাঙানোর কাজ। কিছুটা দূরে বহরমপুর ওয়াইএমএ-র মাঠ। সেখানে ম্যারাপ বাঁধার কাজ চলছে। দু’টি ভাগে প্রায় ছ’শো শ্রমিক শনিবার থেকে নাগাড়ে কাজ করে চলেছেন। কিছু লোক বাঁশ বাঁধছে। কিছু লোক মাঠের সবুজের উপরে খুব ছোট পাথর ফেলে কাদা ঢেকে গাড়ি চলাচলের উপযুক্ত
করতে ব্যস্ত।
আগামী ৩০ জুন মুর্শিদাবাদ আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন লালবাগে মতিঝিল পর্যটনকেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন তিনি। পর দিন ১ লা জুলাই রবীন্দ্রসদনে প্রশাসনিক বৈঠক ও পরে ওয়াইএমএর মাঠে সাধারণ সভা হওয়ার কথা। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি কিংবা তিনি কী বার্তা দেন— তা নিয়ে চর্চাকে ছাড়িয়ে গেল পদ্মের নির্বাসন নিয়ে কানাঘুসো, ফিসফাস। কিন্তু, কার নির্দেশে এটা হল?
এ বিষয়ে জেলার আধিকারিকদের কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। রবীন্দ্রসদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ডিআইসিও (মুর্শিদাবাদ) সন্দীপ পাল এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সদুত্তর মেলেনি জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের থেকেও। তবে জেলা প্রশাসনেরই একাংশ মানছেন, পদ্ম সরানোর ব্যাপারে কোনও লিখিত নির্দেশ আসেনি। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই জলাশয়ের পাশ দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ঢুকবেন। পরে প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন। তাঁর নজরে ওই ফুল এলে কোনও রোষের মুখে পড়তে হবে না তো!’’ সেই সতর্কতা থেকেই পদ্মকে নির্বাসনে পাঠানো বলে জানাচ্ছেন তিনি।
এমন ঘটনায় তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিজেপি। সংগঠনের যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘এখন পদ্মে ভয় পেতে শুরু করেছেন তৃণমূলনেত্রী। নেত্রীর রোষের পড়ার ভয়ে তৃণমূল নেতাদের পরামর্শেই পদ্ম তুলে ফেলা হয়েছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতারা।