lottery

Lottery: কোটির লটারি, টিকিট গেল চুরি

গয়েশপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, মধ্য-তিরিশের তাপস দাসের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। অসুস্থ শরীর। কোনও দিন ভ্যান চালান, কোনও দিন চালান না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১ ০৫:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক কোটি টাকার লটারি লেগেছিল এক ভ্যানচালকের। কিন্তু সেই লটারির টিকিটই ঘর থেকে চুরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। শাশুড়ি ও সস্ত্রীক শ্যালক-সহ ছ’জনের নামে কল্যাণী থানায় অভি‌যোগ করেছেন তিনি। তবে তা সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার রাত পর্যন্ত খোয়া যাওয়া টিকিট উদ্ধার হয়নি।

Advertisement

গয়েশপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, মধ্য-তিরিশের তাপস দাসের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। অসুস্থ শরীর। কোনও দিন ভ্যান চালান, কোনও দিন চালান না। ছোট থেকেই তাঁর লটারি কাটার নেশা। এই নিয়ে স্ত্রী অনিতার সঙ্গে নিত্য অশান্তি। তার পরেও লটারির নেশা যায়নি।

তাপস পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ১৬ জুলাই নাগাল্যান্ড স্টেট লটারির প্রথম পুরস্কার এক কোটি টাকা জেতেন তিনি। প্রথমে হতবাক, তার পর খুশিতে দিশেহারা অবস্থা স্বামী-স্ত্রীর। খবর জানাজানি হতে দেরি হয়নি। পাড়াপড়শি কেউ কেউ পরামর্শ দেন, ঝুঁকি না নিয়ে আপাতত কয়েক দিন বাড়ির বাইরে থাকতে। কখন কী হয়, বলা যায় না। তাপসের স্ত্রী জানান, প্রতিবেশী কয়েকটি যুবক এসে তাঁর স্বামীকে স্থানীয় এক নেতার সঙ্গে দেখা করার জন্য চাপাচাপিও করছিল। তাই তাঁরা শনিবার কল্যাণী থানার সগুনায় বিজয়নগরে অনিতার বাপের বাড়ি চলে যান। ওই বাড়িতে একটি ব্যাগে লটারির টিকিট রেখে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী পাশের বাড়িতে রাত কাটাতে গিয়েছিলেন। রাতেই খবর পান, ব্যাগ থেকে লটারি চুরি হয়ে গিয়েছে। অনিতাদের বাড়িতে তাপসের শাশুড়ি ছাড়া আছেন শ্যালক ও তাঁর স্ত্রী। তাপসের দাবি, ব্যাগে লটারির টিকিট থাকার কথা ওই তিন জন আর আর দু’একজন জানত। কেননা লটারি জেতার পরেই তাঁরা চাউর করেছিলেন যে টিকিট জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাঁর শ্যালক বিকাশ ঢাকির দাবি, “যে বাড়িতে ওরা রাতে শুতে গিয়েছিল, তারাই ওদেরকে কিছু খাইয়ে দেয়। ওরা সারারাত ঘুমে অচেতন ছিল। মা-ও ওদের বাড়ি থেকে খেয়ে এসেছিল। আমি আর আমার স্ত্রী ওদের বাড়ির খাবার অল্প খেয়েছিলাম। তা ছাড়া, সারা রাত আমি জ্বরে ধুঁকছিলাম।”

Advertisement

বিকাশের দাবি, রাত ১১টা নাগাদ তিন জন এসে টিকিট চায়। তাঁর মা ভেবেছিলেন, অনিতা এসেছে। তারাই ওই টিকিট নিয়ে গিয়েছে। অনিতা আবার খাবার খেয়ে অঘোরে ঘুমের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “ওই রাতে আমার স্বামী ঘুমোলেও আমি তেমন গভীর ঘুমোইনি। শুনেছি, ভাইয়ের বৌও জেগে ছিল। কিন্তু সে কোনও শব্দই পায়নি।” কল্যাণী থানা সূত্রে জানা যায়, যে বাড়িতে তাপসেরা রাতে শুতে গিয়েছিলেন সেই বাড়ির তিন জনের নামও অভিযোগপত্রে রয়েছে। যদিও বহু চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিনই তাপসেরা গয়েশপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। যে টিকিট চুরি হয়ে গিয়েছে, তার টাকা কি তাপস পেতে পারেন? যে এজেন্সির কাছ থেকে তাপস টিকিট কেটেছিলেন তাঁর কর্ণধার সিন্ধু দাস বলছেন, “ওর জন্য অফিসের সঙ্গে কথা বলব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement