পাঁচ হাজার বোতল কাশির সিরাপ-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল বহরমপুর থানার পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
ফের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বোতল কাশির সিরাপ-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল বহরমপুর থানার পুলিশ। শুক্রবার রাতে বহরমপুরের নগড়াজোল থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা হল নগড়াজলের রহিত শেখ, জলঙ্গির মিজানুল মণ্ডল এবং বহরমপুরের শ্যামানগরের দিলীপ ওরাই।
ধৃতদের শনিবার বহরমপুরে জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নগড়াজোলে রহিত শেখের গুদাম থেকে ৫৬৫০ বোতল কাশির সিরাপ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাড়ি থেকে বাকি দু’জনের সঙ্গে রহিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখান থেকে একটি করে চার চাকার গাড়ি, মোটরবাইক এবং ই-রিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। দু’টি মোবাইলও উদ্ধার করা হয়েছে। বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘কোথা থেকে কাশির সিরাপ আসছিল, কোথায় যাচ্ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে আর কে কে জড়িত আছে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
শুক্রবার রাতে বহরমপুরে ধৃত তিন জনকে নিয়ে গত এক মাসে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় ১৫টি ঘটনায় ২৫ জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হল। এক মাসে এত মাদক কারবারি গ্রেফতার হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, পুলিশের হাতে যারা পাকড়াও হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি কারবারি মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ভিন্ রাজ্য থেকে হেরোইন থেকে শুরু করে গাঁজা, কাশির সিরাপ জেলায় ঢুকছে। জেলায় মাদক নিয়ে ঢুকলেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা, রানিতলা থেকে রানিনগর, লালগোলা, কান্দি, জিয়াগঞ্জ, বহরমপুর সহ বহু এলাকা থেকে মাদককারবারিদের ধরা হচ্ছে। সূত্রের খবর, গত এক মাসে যে ২৫ জন মাদক কারবারি গ্রেফতার হয়েছে, তার মধ্যে বহরমপুর থেকে সব থেকে বেশি গ্রেফতার হয়েছে। গত এক মাসে চারটি ঘটনায় বহরমপুর থানার পুলিশ ১০ জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে।
লালগোলা থানার পুলিশ চারটে ঘটনায় ৬ জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়া নবগ্রাম, ভগবানগোলা, রানিনতলা, রানিনগর, কান্দি, জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশও গত এক মাসে কিছু মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে। যা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।
কী কী মাদক পাচার হচ্ছে?
পুলিশ সূত্রের খবর, জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মূলত হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট, কাশির সিরাপের মতো মাদক বাংলাদেশে পাচার হয়। তবে বর্তমানে হেরোইন, কাশির সিরাপ ও গাঁজা পাঁচার বেশি হচ্ছে। সে সব ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে, মুর্শিদাবাদকে কি মাদক কারবারিরা চোরাচালানের করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে? পুলিশ জানাচ্ছে, তদন্ত চলছে।