৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
রানাঘাটে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর থাকা একটি রেলগেট স্থানান্তরের কাজ চলায় শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখার কথা রেলের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার দেরে রবিবার দিনভর তীব্র যানজটে হাঁসফাঁস করল কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের মূল ধমনী এই জাতীয় সড়ক। নাজেহাল হলেন দূরপাল্লার বাসযাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ির চালকেরা।
রেল ও নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাটে ৫৫ নম্বর রেলগেট অর্থাৎ মিশন গেটে একটি উড়ালপুল তৈরির কাজ চলছে। সে কারণে পুরনো জাতীয় সড়কের সমান্তরালে একটি ‘সার্ভিস রোড’ করা হয়েছে। আগের সড়কের অভিমুখ ঘুরিয়ে সেটির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। রেলগেট স্থানান্তরের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে রাতে কাজ হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যের সঙ্গে কলকাতা তথা দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এই সড়কের। রানাঘাটের বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাত্র ১০ মিনিট রেলগেট বন্ধ রাখা হলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা রেলগেট বন্ধ রেখে কাজ হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশকর্তা বলেন, “শুধু রেলগেট বন্ধ রেখে কাজ করাই নয়। জাতীয় সড়কে যে নতুন সার্ভিস রোড হয়েছে, তা আগের সড়কের তুলনায় চওড়ায় অনেকটাই কম। ফলে রেলগেটের কাছে থাকা ‘হাইট বার’-এ পাশাপাশি দু’টি বড় পণ্যবাহী গাড়ি যাতায়াত করায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।"
পুলিশ সূত্রের খবর, যানজট এড়াতে শান্তিপুর, হবিবপুর, ঘাটিগাছা প্রভৃতি জায়গায় রাতে বড় যানবাহন আটকে দেওয়া হয়েছিল। রবিবার সকালে সেগুলি চলাচল শুরু করতেই কয়েক কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়ে যায়। সরকারি ও বেসরকারি দূরপাল্লা বাস পরিষেবা ব্যাহত হয়। যদিও অ্যাম্বুল্যান্স ও ছোট গাড়িগুলিকে রানাঘাটে কোর্ট মোড় ও পায়রাডাঙার ঘাটিগাছা থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। রবিবার রাত পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
লরি চালকদের একাংশের মতে, অপরিকল্পিত ভাবে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সারা রাত বন্ধ করে রাখার অভিঘাত যে সাঙ্ঘাতিক হবে, তা আগেই বোঝা উচিত ছিল।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ কর্তৃপক্ষের জেলা প্রকল্প আধিকারিক রাজু কুমার বলেন, “কয়েক মাসের জন্য রেলগেটের কাছে ওই সার্ভিস রোড ব্যবহৃত হবে। উড়ালপুল তৈরির কাজ শেষ হলে যানজটের সমস্যা আর থাকবে না।”