প্রস্তুতি বুঝতে পরীক্ষা হল ভোটকর্মীদের 

গত সপ্তাহে প্রশিক্ষণের দিন প্রিসাইডিং অফিসার এবং ফার্স্ট পোলিং অফিসারদের হাতে ১৮২ পাতার একটি পুস্তিকা তুলে দেওয়া হয়েছিল। ‘প্রিসাইডিং অফিসারদের জন্য নির্দেশ’ সংবলিত সেই পুস্তিকায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ১০:৪০
Share:

প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের।

চৈত্রের ঠা ঠা রোদ। বসন্তের আমেজ উধাও হয়ে গিয়ে পুরোপুরি গ্রীষ্ম। দরদর করে ঘাম ঝরছে কপাল থেকে। ওই ভাবেই হন্তদন্ত হয়ে শনিবার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ঢুকলেন এক ভোটকর্মী। ঘরে ঢুকে বেঞ্চে বসে রীতিমতো হাঁফাচ্ছিলেন ওই প্রৌঢ়। তার মধ্যে প্রশাসনিক এক কর্তার কথা শুনে তাঁর মুখ শুকিয়ে যাওয়ার জোগাড়। ওই আমলা বলছিলেন, ‘‘এতদিন আপনাদের ভোটের যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তার ওপর পরীক্ষা নেওয়া হবে। অকৃতকার্য হলে, ফের পরীক্ষায় বসতে হবে।’’

Advertisement

হঠাৎ পরীক্ষা নেওয়ার কথা শুনে ভোটকর্মীরা মুখ চাওয়াচাওয়ি শুরু করে দিলেন। বহরমপুরের কাশীশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভোটের প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক শিক্ষক বলছিলেন, ‘‘এমন পরীক্ষা তো হওয়ার কথা ছিলনা। কী বিপদ বলুন তো? ফেল করলে মুখ দেখানোর জো থাকবে! সেক্ষেত্রে আবার পরীক্ষায় বসতে হবে! কী ঝামেলা!’’

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে প্রশিক্ষণের দিন প্রিসাইডিং অফিসার এবং ফার্স্ট পোলিং অফিসারদের হাতে ১৮২ পাতার একটি পুস্তিকা তুলে দেওয়া হয়েছিল। ‘প্রিসাইডিং অফিসারদের জন্য নির্দেশ’ সংবলিত সেই পুস্তিকায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। তার ওপর পরীক্ষা হয়েছে। লালবাগের এক স্কুলে প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক ভোটকর্মী বললেন, ‘‘পরীক্ষা নেওয়ার কথা আগে জানলে কমিশনের দেওয়া পুস্তিকায় একটু চোখ বুলিয়ে আসা যেত।’’ এদিন প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে অনেকের কপালে ভাঁজ পড়ে। ৩০ নম্বরের পরীক্ষার সবক’টি ‘মালটিপল্‌ চয়েস কোয়েশ্চেন’ ছিল। যে বিষয়ের ওপর প্রশ্ন এসেছে, তা ভোটের প্রশিক্ষণপর্বে আলোচিত হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু অনেকেরই সে সব তথ্য পুরোপুরি মনে ছিল না। পরীক্ষার শুরু হতেই অনেকে প্রশ্নের নম্বর ধরে একে অন্যদের কাছে উত্তর জানতে চাইছিলেন। অনেকে আবার প্রশিক্ষকদের অনুনয়ের সুরে বলছেন, ‘‘স্যর, উত্তর বলে দিন। না হলে ফের পরীক্ষায় বসতে হবে। এই বয়সে পৌঁছে পরীক্ষায় ফেল করলে মুখ দেখানো যাবে না’’ প্রশিক্ষকরা অবশ্য নীরবই ছিলেন। তবে কড়া নজরদারি না হওয়ায় ‘হল কালেকশন’ করে অনেকেই উতরে গিয়েছেন।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শনিবার দুপুরে কান্দি রাজ হাইস্কুলে প্রশিক্ষণকেন্দ্রে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন জেলাশাসক পি উলাগানাথন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাঁরা প্রশিক্ষণে কতটা শিখেছেন, সেটা জানতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফল নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।’’ তিনি জানান, যাঁরা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবেন তাঁদের ফের পরীক্ষায় বসতে হবে। এর আগে জেলার ২৭ হাজার ৪০০ ভোট কর্মীর প্রশিক্ষণ হয়েছে। জেলার সব মহকুমায় ভোট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার ও ফার্স্ট পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণে ডাকা হয়। মোট ১৩ হাজার ২০০ ভোটকর্মী দ্বিতীয় বারের জন্য প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের আগে তাঁদের ৩০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। মূলত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, ইভিএম ভিভিপ্যাট বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement