শুরু হয়েছে প্রচারও। নিজস্ব চিত্র
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় ফরাক্কা দক্ষিণ শাখার এরিয়া কমিটির সদস্য অরুণময় দাসের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে সিপিএম। অরুণবাবুর মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসেবে স্বাক্ষর করায় সিপিএমের আরও তিন এরিয়া কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল, বলরাম মণ্ডল, হিমাংশু শেখর সাহা ও দলীয় সদস্য শ্যামল মিশ্রের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নিচ্ছে দল।
১৯৯০ সালে দলের সদস্যপদ পান অরুণবাবু। এক সময় দলের জেলা কমিটির সদস্য ও ফরাক্কা জোনাল কমিটির সম্পাদকও নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি এরিয়া কমিটির সদস্য। বছর পঞ্চাশের অরুণবাবুর যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে ফরাক্কায়। তাঁকে নিয়ে দলে কখনও কোনও বিতর্কও তৈরি হয়নি। ৪ এপ্রিল মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াই রীতিমতো বিস্মিত দলের নেতারা। ‘উইকেট’ প্রতীক পেয়ে প্রচারেও নেমে পড়েছেন তিনি। কিন্তু মালদহ দক্ষিণে অরুণবাবু নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়লেন কেন?
অরুণবাবু বলছেন, “রাজ্যের সব আসনে প্রার্থী দেওয়া হল। অথচ মালদহ দক্ষিণে দল প্রার্থী দিল না কেন— এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি দলের নেতারা। দলে এ নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি। কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের জোট হয়নি। তা হলে কেন মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে সিপিএম কর্মীরা কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেবেন? এ নিয়ে দলের সবাই ক্ষুব্ধ। তাই দলের বহু নেতার সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু দল যে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে তা বিলক্ষণ জানেন অরুণবাবু। তার পরেও তিনি বলছেন, ‘‘বহিষ্কারের আগে দল শো-কজ করুক। তার পরে আমি যা উত্তর দেওয়ার তা দেব।”
ফরাক্কা দক্ষিণ শাখার সিপিএম এরিয়া কমিটির সম্পাদক মনোরঞ্জন ঘোষ বলেন, “তিনি যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তা নিয়ে দলের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি। দলের কোনও নেতার সমর্থন করার প্রশ্নই নেই। দু’-এক জন নেতা ছাড়া দলের কেউই তাঁর পাশে নেই।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবুল হাসনাত খান জানান, মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয় দল। সেই মতো প্রচার শুরু হয়েছে। বিগত বছরেও এই কংগ্রেস প্রার্থীই সাংসদ ছিলেন। তিনি কোনও কাজ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে সিপিএম কর্মীদেরও ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে তাঁর বিরোধিতা করলে সুযোগ নেবে তৃণমূল ও বিজেপি।
আবুল হাসনাত খান বলছেন, ‘‘দলের এই সিদ্ধান্ত জেনেও নির্বাচনে দাঁড়িয়ে অরুণময়বাবু ঠিক করেননি। তাঁকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে। অরুণবাবু-সহ তাঁর প্রস্তাবে সমর্থনকারী সব নেতার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে দল। প্রয়োজনে দল থেকে তাঁদের বহিষ্কারও করা হতে পারে।”
দলের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “ওই সদস্যকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। আশা করছি তিনি তা করবেন। না করলে দলের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’