মুকুট-বিদায়, পদ্মে জগন্নাথ

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর তাঁর ইস্তফা গ্রাহ্য না করায় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল-এ (স্যাট) গিয়েছিলেন বাদকুল্লা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক মুকুটমণি। তারা বুধবার শুনানির দিন ধার্য করায় মঙ্গলবার তিনি মনোনয়নও জমা দেন।

Advertisement

সুস্মিত হালদার 

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০৯:১৭
Share:

জগন্নাথ সরকারকে। ফাইল চিত্র

সরকারি ফাঁড়া আর কাটল না মুকুটমণি অধিকারীর। বুধবার স্ক্রুটিনির সময়সীমা পেরনো পর্যন্ত তাঁর ইস্তফা গ্রাহ্য হল না। কপালের ফেরে রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হলেন দলের দক্ষিণ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি জগন্নাথ সরকারই। কাল, শুক্রবারের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তিনিই লড়বেন ভোটে।

Advertisement

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর তাঁর ইস্তফা গ্রাহ্য না করায় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল-এ (স্যাট) গিয়েছিলেন বাদকুল্লা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক মুকুটমণি। তারা বুধবার শুনানির দিন ধার্য করায় মঙ্গলবার তিনি মনোনয়নও জমা দেন। হয়তো তাঁর আশা ছিল, এ দিন দুপুর ৩টেয় স্ক্রুটিনির নির্ধারিত সময় পেরনোর আগেই ‘স্যাট’ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে যাবেন। কিন্তু এ দিন ‘স্যাট’ জানায়, শুক্রবার ফের শুনানি হবে। এর পরেই মুকুটমণির ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়।

একে তো রানাঘাটে প্রার্থী ঘোষণা করতেই অনেকটা দেরি করেছিল বিজেপি। তার পরে এই ঘটনায় আরও জলঘোলা হল। দিনের শেষে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা নদিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘মুকুটমণি স্যাটে যে মামলা করেছেন তার শুনানি শুক্রবার। এখন আর শুনানি করেই বা কী হবে? স্ক্রুটিনির দিন তো পেরিয়েই গেল!’’

Advertisement

মুকুটমণি অবশ্য শেষ মুহূর্ত প্রার্থী থাকার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। এ দিন সকাল-সকাল তিনি চলে আসেন জেলাশাসকের অফিসে নির্বাচনী দফতরে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময়ে বিএসপি প্রার্থী গৌতম রায় ও কংগ্রেসের মিনতি বিশ্বাস তাঁর ইস্তফা অগ্রাহ্য হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে মনোনয়ন নিয়ে আপত্তি তোলেন। লিখিত অভিযোগও জানান তাঁরা। মুকুটমণি প্রথমে আরও দু’দিন সময় চেয়েছিলেন। সেটা সম্ভব নয় জেনে দুপুর ৩টের মধ্যে ইস্তফা গ্রহণ সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান তিনি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তখনও হয়তো তাঁর আশা ছিল, ‘স্যাট’ তাঁর পক্ষে রায় দেবে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দুপুর ৩টে নাগাদ ফিরে বীরভূমের চিকিৎসক তথা সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিমের ইস্তফাপত্র গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলার কথা উল্লেখ করে মুকুটমণি আরও সময় চান। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি নিজে সেই মামলার ‘অ্যাডেড পার্টি’ কি না। মুকুটমণি জানান, তিনি তা নন। তার পরেই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। মুকুটমণি হতাশ হয়ে বেরিয়ে যান।
শেষ আশাটুকুও মিলিয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন মুকুটমণির অনুগামীরা। আর, উল্লসিত হয়ে ওঠে জগন্নাথ শিবির। সত্যি বলতে, প্রথম থেকেই তাঁর নাম আলোচনায় ছিল। মাঝখান থেকে মুকুটমণিকে দল প্রার্থী ঘোষণা করায় ছুঁচো গিলতে হয়েছিল জগন্নাথ-অনুগামীদের। এখন পাকে-চক্রে সেই তিনিই প্রার্থী হওয়ায় খুশি তাঁর অনুগামীরা। তবে দলের সকলে তাঁর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছেই। দিনের শেষে জগন্নাথ অবশ্য দাবি করেন, “আমার সঙ্গে দলের সর্বস্তরের নেতা ও কর্মীরা আছেন। এর বাইরে যদি কেউ কিছু বলে বা করে থাকেন, মানুষ তাঁদের গ্রহণ করবেন না।’’

ফলেন পরিচিয়তে...।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement