স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুই পরিবারের মধ্যে পুরনো শত্রুতা রয়েছে। ফাইল চিত্র ।
সকাল থেকে বোমা ফাটার দুমদাম শব্দ। ধোঁয়ার চোটে অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে এলাকা। আতঙ্কে ছোটাছুটি করছেন সাধারণ মানুষ। না হিন্দি ছবি ‘গ্যাংস ওফ ওয়াসেপুর’-এর দৃশ্য নয়, রবিবার সকালে নদিয়ার পলাশিপাড়ার ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, পলাশিপাড়া থানার ধাওয়াপাড়া এলাকার দু’পরিবারের গন্ডগোলের জেরেই কার্যত এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছে দুই পরিবারের দুই সদস্যের প্রণয়ের সম্পর্ক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার আজাদ শেখের কন্যা এবং কবীর মণ্ডলের পুত্রের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দু’জনের বাড়িতে বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হয়। এর পর থেকেই বেশ কিছু দিন ধরে আজাদ এবং কবীরের পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছে। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুই পরিবারের মধ্যে পুরনো শত্রুতা রয়েছে। আর সেই কারণেই এই সম্পর্ককে মান্যতা দিতে রাজি হননি পরিবারের সদস্যেরা। শনিবার রাত থেকে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা আরও বাড়তে থাকে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রবিবার সকালে ধাওয়াপাড়া এলাকায় জুম্মা মসজিদের সামনে দু’পক্ষের গন্ডগোল শুরু হয়। অভিযোগ, দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে মারধর এবং পরে বোমা বাজি শুরু হয়। একে একে মোট পাঁচটি বোমা বিস্ফোরণ হয় বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। বোমাবাজির খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে বোমার মশলাও উদ্ধার করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে, স্থানীয় বাসিন্দা রাবেয়া বিবি বলেন, ‘‘ওঁদের ছেলেমেয়ের প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে গন্ডগোল। ওঁরা নিজেরা মরলে মরুক। আমাদের বাড়ির সামনে বোমাবাজি করছে কেন? পুরো ঘটনা নিয়ে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে নতুন করে অশান্তি যাতে না ছড়ায়, তার জন্য গ্রামে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, যে জায়গায় বোমাবাজির কথা বলা হচ্ছে সেখানে কালো কালো দাগ স্পষ্ট। তবে সেটা বোমা কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। যদিও স্থানীয়দের জোরালো দাবি, বোমাবাজি হয়েছে।
তেহট্ট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভতোষ সরকার বলেন, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।’’
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বোমাবাজির পর থেকে দু’পক্ষকেই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তাঁরা পলাতক বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে।