খাল থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। ধনঞ্জয়পুর খালপাড়ে। ছবি: সন্দীপ পাল।
বেআইনি ভাবে ফের খালের মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, নাকাশিপাড়া ব্লকের ধনঞ্জয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মনারায়ণপুর খাসপাড়ার খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্রামবাসীদের একাংশ লিখিতভাবে পঞ্চায়েতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত থেকেও ব্লক প্রশাসন এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে জানানো হয়েছে। কিন্তু মাটি কাটা বন্ধ হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে, রাতের অন্ধকারে অবাধে চলছে মাটি কাটা। মেশিনের সাহায্যে মাটি কেটে ট্রাক্টর করে পৌঁছে যায় বিভিন্ন ইটভাটায় ও বাড়িতে। অভিযোগ, গ্রামের রাস্তায় মাটির গাড়ি যাওয়ার ফলে রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া বহনের সময় রাস্তায় মাটি পড়ার পর তা বৃষ্টির জলে ভিজে কাদা হয়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ছে। সাইকেল, মোটরবাইক চালকদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেকেই দুর্ঘটনায় পড়ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল থেকে অনেক গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এমন ভাবে কাটা হচ্ছে, বর্ষার সময় ওই জায়গায় জল জমলে গভীরতা বোঝা যাবে না। এছাড়াও খালের পাড়ে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, কোনও ক্ষেত্রে চাষি এবং ভূমি দফতরের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটা হয়। কোনও ক্ষেত্রে কৃষিজমি কিনে নেন মাটি কারবারিরা। তার পরে ভূমি দফতরের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটেন। কিন্তু প্রায় সব ক্ষেত্রেই অনুমতি যতটা, মাটি কাটা হয় তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে, অনেক বেশি গভীর করে। ফলে পাশের জমির ক্ষতি হয়। মাটি কারবারিদের এই বেআইনি কাজ প্রশাসন দেখেও দেখে না বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “ওই খাল পড়শি বিলকুমারি পঞ্চায়েত লাগোয়া। রাতের অন্ধকারে ওই পঞ্চায়েতের বেশ কিছু মাটি মাফিয়া দেদার মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা পঞ্চায়েতে জানিয়েছি। আমাদের দাবি, অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও খালের সংস্কার করে খালের দু’দিকে মাটি দিতে হবে।”
এ বিষয়ে ধনঞ্জয়পুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সদানন্দ মণ্ডল বলেন, “গ্রামের মানুষ আমাদের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। বিষয়টি আমরা ব্লক প্রশাসন, ভূমি দফতর সহ অন্যান্য দফতরে জানিয়েছি।” শুক্রবার সকালে ওই এলাকায় পুলিশ হানা দেয়। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। কয়েক দিন আগেই নাকাশিপাড়া ব্লকের কাঁচকুলি গ্রাম থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে দুটি মাটি কাটার মেশিন আটক করে প্রশাসন। নাকাশিপাড়া ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক দুলাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, “আমাদের নিয়মিত অভিযান চলে। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”