প্রতীকী ছবি
সরকারের তরফে কড়া নির্দেশ রয়েছে করোনা আক্রান্তের তালিকা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলায় সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সই করা আক্রান্তের নামের তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কেবল তাই নয়, সেখানে আক্রান্তের নাম ঠিকানাকে কে সবার আগে ছড়িয়ে দিতে পারে, তা নিয়েও চলছে প্রতিযোগিতা। এমনকি ওই তালিকায় থাকা আক্রান্তের ফোন নম্বর প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে সাধারণের উদ্দেশে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা উদ্বিগ্ন। তাঁদের দাবি, ওই তালিকা থাকছে প্রশাসন পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। ফলে কোথা থেকে বাইরে আসছে সেটা বলা খুব কঠিন। তবে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে পুলিশের সাহায্য নেবেন বলে জানিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
তবে ঘটনা নতুন নয়, যেদিন থেকে এ জেলায় আক্রান্তের তালিকা তৈরি হয়েছে, তখন থেকেই এই প্রবণতা দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার হল, বেশ কয়েক জন শিক্ষিত মানুষ এবং সংবাদ মাধ্যমের একাংশের কর্মীও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনছেন সেই তালিকা। ডোমকলের এসিএমওএইচ মামুন রশিদ বলেছেন, ‘‘বিষয়টি খুব উদ্বেগের, সাধারণ মানুষের আরও সচেতন হওয়া দরকার। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালিয়ে প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নেব ওই ঘটনা রুখতে।’’ পুলিশের দাবি, স্বাস্থ্য দফতর যদি অভিযোগ জানায় তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দিন চারেক আগে জলঙ্গির সাগরপাড়া গার্লস স্কুলের কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকা এক পরিযায়ী শ্রমিক আক্রান্ত হন করোনায়। তাঁর পজ়িটিভ রিপোর্ট ব্লক সাস্থ্য দফতরের হাতে পৌঁছনোর আগেই ঘুরতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি তাঁকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার আগেই খবর ছড়িয়ে পড়ে গোটা জলঙ্গি জুড়ে। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায় এবং আক্রান্তের পরিবারে। এমনকি তালিকায় থাকা ফোন নম্বর দেখে একের পর এক ফোন আসতে শুরু করে আক্রান্তের পরিবারে।
তাঁদের দাবি, ‘‘আমরা এই ঘটনায় ভীষণ ভাবে বিব্রত হয়েছি, আতঙ্কিতও হয়ে পড়েছিলাম একের পর এক ফোন পেয়ে। মনে হচ্ছিল আমরা যেন খুব বড় একটা অপরাধ করে ফেলেছি।’’ একই ভাবে ডোমকল এবং জেলার অন্যান্য এলাকার আক্রান্তদের পরিবারেরও অভিযোগ একই। তাদের দাবি, সরকারি তরফে আক্রান্তের নাম-ঠিকানা গোপন রাখার কথা বলা হলেও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের স্বাক্ষর করা তালিকা দেদার ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।