ফাইল চিত্র।
তৃণমূল কার্যত ঘরে বসে। বিজেপি জেলা জুড়ে ‘বিজয় উৎসব করছে। এই পরিস্থিতিতে জেলার এক মাত্র বাম পরিচালিত পুরসভা তাহেরপুরে নাগরিক বিল নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে বামেরা।
এক সময়ে এই এলাকায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য দেখিয়ে এসেছে বামেরা। কিন্তু গত লোকসভা ভোটের নিরিখে সেখানেই পিছিয়ে কার্যত তৃতীয় স্থানে পৌঁছে গিয়েছে তারা। আগামী বছর পুরভোটের আগে সেখানেই নাগরিক বিল নিয়ে তাদের তৎপরতা কৌশল হিসেবে কার্যকর হতে পারে, না-ও পারে। কেননা ভোটারদের একাংশের সাম্প্রদায়িক আবেগ উসকে উঠলে তাঁরা বামেদের থেকে আরও দূরে সরে যেতে পারেন।
১৯৯৫ সালে তাহেরপুরে প্রথম পুর নির্বাচন হয়। উদ্বাস্তু অধ্যুষিত তাহেরপুরে গোড়া থেকেই আধিপত্য ছিল বামেদের। মাঝে ২০১০ সাল বাদ দিলে এখানে পুরভোটে তারাই জিতেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক লোকসভা ভোটের নিরিখে এই এলাকায় বেশ কিছুটা পিছিয়েই পড়েছে বামেরা। অঙ্ক বলছে, শুধু পিছিয়ে পড়াই নয়, তারা নেমে গিয়েছে তৃতীয় স্থানে। ১৩টির মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডেই লিড পেয়েছে বিজেপি। একটিতে সামান্য ভোটে এগিয়ে তৃণমূল। কিন্তু উদ্বাস্তু অধ্যুষিত তাহেরপুরে গেরুয়া ঝড়ে বামেরা এতটা পিছিয়ে পড়বে, তা নেতারা হয়তো ভাবেননি।
আগামী বছরেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাহেরপুর পুরবোর্ডের। সে কথা মাথায় রেখে পুরভোটের আগে লোকসভার পিছিয়ে থাকার ক্ষত মিটিয়ে ফেলতে ঝাঁপাচ্ছে বামেরা। এ বারে নাগরিক বিলের বিরুদ্ধে প্রচারে তাহেরপুরে কিছুটা ভিন্ন কৌশল নিচ্ছে তারা। জেলাস্তরের এক বাম নেতা জানান, কেন্দ্রীভূত কর্মসূচি নয়, বরং বিকেন্দ্রীভূত কর্মসূচির উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। তাহেরপুর শহরে ছোট-ছোট সভার পাশাপাশি বাড়ি-বাড়ি প্রচারের উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এক নেতার কথায়, ‘‘এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছেই পৌঁছতে চাইছি আমরা। এক জন-এক জন করে ধরে-ধরে মানুষের সঙ্গে কথা বলব।’’
সিপিএমের একটি সূত্রের খবর, ডিসেম্বর থেকেই এই প্রচার শুরু হয়ে যাবে। দলের বিভিন্ন শাখা কমিটির উদ্যোগে এই প্রচার হবে। সেখানে থাকবেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাঁরা বাড়ি-বাড়ি যাবেন। এ ছাড়া প্রত্যেকটি ওয়ার্ড ধরে ছোট-ছোট মিছিল করা হবে। বিভিন্ন জায়গায় মাইকে প্রচার চালানো হবে, বিলি হবে লিফলেট। থাকবে হাতে লেখা পোস্টারও। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নাগরিক বিল নিয়ে নিজেদের বার্তা পৌছে দিতে তাহেরপুরে বড় সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে বামেদের তরফে। সব মিলিয়ে নাগরিক বিল নিয়ে পথে নেমে জনসংযোগ মজবুত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বামেরা।
সিপিএমের তাহেরপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুপ্রতীপ রায় বলেন, “এই নাগরিক বিলের বিপদ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এর মাধ্যমে বিজেপি শুধু বিভাজনের রাজনীতিই করছে না, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা প্রতিটি মানুষের কাছে আমাদের বার্তা নিয়ে পৌঁছব।”