চলছে কর্মবিরতি। —নিজস্ব চিত্র।
সেই চেনা অভিযোগ। বিচারকের দুর্ব্যবহার। আর তার জেরেই কান্দি মহকুমা আদালতের এক বিচারকের এজলাস লাগাতার বয়কট চালিয়ে যাচ্ছে আইজীবীরা।
সাড়ে তিন মাসের মধ্যে এই নিয়ে কান্দি মহকুমা আদালতে দ্বিতীয়বার হৈমন্তিকা সুনদাস নামের ওই আইনজীবীর এজলাস বয়কটের ঘটনা ঘটল। এর আগে একই অভিযোগে ওই আইনজীবীর এজলাস ৫৭ দিন বয়কট করেছিলেন আইনজীবীরা। সে বার আইনজীবীদের ভোজসভায় গিয়ে মাণভঞ্জন করতে হয়েছিল বিচারককে। এবার আইনজীবীরা দাবি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বিচারককে বদলি না করা পর্যন্ত তাঁরা বয়কট চালিয়ে যাবেন।
এ বারে কর্মবিরতি সোমবার ১৩ দিনে পড়ল। দিনের পর দিন আদালতে এসে ফিরতে হচ্ছে বিচারপ্রার্থীদের।
আইনজীবীদের কর্মবিরতি অবশ্য নতুন কোনও ঘটনা নয়। কখনও চুঁচুড়া, কখনও রানাঘাট, কখনও বনগাঁ আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলেছে দিনের পর দিন। এমনকী এই তালিকায় নাম উঠেছে কলকাতা হাইকোর্ট-এরও। প্রতিটি ক্ষেত্রেই হয় জেলা বিচারক, নয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। চুচুড়া আদালতের সমস্যা না মেটায় শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত বিচারককে বদলিই করতে হয়।
আইনজীবীদের অভিযোগ, ওই বিচারক আইনজীবি থেকে বিচারপ্রার্থী— সকলের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করেন। জামিন পেলেও কাগজ দেরিতে জেলে যাওয়ার জন্য জেল থেকে ছাড়া পেতে এক দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। আইনজীবিরা এর কারণ জানতে চাইলে বিচারক তাঁদের অপমান করেন। তার পরেই ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ওই বিচারকের অপসারণের দাবিতে তাঁর এজলাস বয়কট শুরু করেন।
কান্দি বার অ্যাসোসিয়েশনে প্রায় ২২০ জন আইনজীবীর সকলেই বয়কটে সামিল হয়েছেন। আইনজীবীরা কাজ না করলেও বিচারপ্রার্থীরাই এতদিন নিজেদের সওয়াল করছিলেন। সোমবার কয়েকজন বিচারপ্রার্থী সওয়াল করতে চাইলে ওই বিচারক তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি কারা হুমকি দেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই আইনজীবীরা এদিন দুপুরে তাঁর এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখান।
কান্দি আদালতের জয়েন্ট বার কাউন্সিলের সম্পাদক সফিউর রহমান বলেন, “আগে এই ধরণের ঘটনা ঘটার পরও ওই আইনজীবী ফের খারাপ ব্যবহার করছেন। আমরা ওঁর অপসারণের দাবি জানিয়েছি।’’