চলছে অবস্থান-বিক্ষোভ। মঙ্গলবার ফুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি চিহ্নিত করা এবং উচ্ছেদের নোটিস দেওয়ার কাজ হয়ে গিয়েছে আগেই। সেই সময়ে বাধা পেতে হয়নি প্রশাসনকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই ফুলিয়াতেই সভা করে জমিদাতাদের দাবি-দাওয়ার কথা জানাল ‘অনগ্রসর জনজাগরণী মঞ্চ’।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য নদিয়ার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কাজ শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বর মাস থেকেই। হরিণঘাটা, চাকদহের মতো জায়গায় উচ্ছেদের পরে শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়ায় এসে প্রথম বাধা পেয়েছে প্রশাসন। এর আগে জ্যোতিপল্লি এলাকায় অনেকেই উচ্ছেদের নোটিস নেননি। প্রশাসনের ডাকা বৈঠকেও যাননি। তাঁদের এবং আশপাশের কিছু জমিদাতার দাবি ছিল, জমির দাম তাঁরা বাবদ অনেক কম টাকা পেয়েছেন। নতুন আইনে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অধিগ্রহণের জন্য আগে যে মাপ নেওয়া হয়েছিল, এখন তার থেকে আরও কয়েক ফুট বেশি জমি নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি।
প্রশাসনের পাল্টা বক্তব্য ছিল, যে সময়ে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে, সেই সময়ের আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে দু’দিন বিরাট পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী নিয়ে উদয়পুর, বেলগড়িয়া, শুকপুকুরিয়া মৌজায় জমি চিহ্নিত করে প্রশাসন। পাশাপাশি, জমিদাতাদের নোটিসও দেওয়া হয়। তখন অবশ্য কেউ কোনও বাধা দেয়নি।
জমিদাতাদের বিষয়টি নিয়ে আগেই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল ‘অনগ্রসর জনজাগরণী মঞ্চ’। তাদের দাবি, মঞ্চকে যথাযথ ভাবে চিঠি দিয়ে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। কোনও আলোচনা না করেই নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার মঞ্চের তরফে ফুলিয়ার চটকাতলা এলাকায় একটি জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন এলাকার জমিদাতারা ছিলেন। তাঁরা অনেকেই নিজেদের সমস্যার কথা বলেন।
জনজাগরণী মঞ্চের তরফে গৌরাঙ্গ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, “প্রশাসন জমিদাতাদের বঞ্চিত করছে। অনেকে ন্যায্য দাম পাননি। আগে যে মাপ নিয়ে অধিগ্রহণ হয়েছে, এখন তার চেয়েও বেশি জমি নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, “প্রশাসন গা-জোয়ারি করছে। আমরা সে সবের মধ্যে যাব না। আইন মেনেই আমাদের প্রতিবাদ আন্দোলন হবে।”
প্রশাসনের দাবি, যাঁদের সমস্যা আছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো হচ্ছে। নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে নোটিস বিলি করেছি। অনেকেই দোকান-বাড়ি-নির্মাণ সরিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে কথাও বলেছেন।”