গ্রাফিক
খাগড়াগড় কাণ্ডের সুতোয় জড়িয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ সীমানা লাগোয়া জেলা মুর্শিদাবাদের নাম। ২০১৪ সালের অষ্টমীর সকালে বর্ধমানের খাগড়গড়ের ভাড়া বাড়ির দোতলায় বোমা বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিলেন শাকিল আহমেদ। মৃত ওই যুবকের পরিচয় জানাতে গিয়ে উঠে এসেছিল বেলডাঙার নাম। শাকিলের প্যান্টের পকেটে থাকা নোটবুক থেকে ডোমকলের ঘোড়ামারা এবং বক্সিপুর গ্রাম জড়িয়ে গিয়েছিল। এর পরেই তদন্তে সুতোয় উঠে এসেছিল লালগোলার মুকিমনগর, বহরমপুরের উপরডিহা, রঘুনাথগঞ্জ ও শমসেরগঞ্জের নাম।
সেই সময়ে ওই মামলার তদন্ত ভার তুলে নিয়েছিল এনআইএ। সেই সময়ে দিল্লি থেকে দফায় দফায় এসে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় তদন্তে ছুটে বেড়িয়েছিলেন এনআইএ’র অফিসারেরা। ঘটনার প্রায় চার বছর পরে গত শুক্রবার সেই খাগড়াগড় কাণ্ডের রায় ঘোষণা হলে দেখা যায় সাজাপ্রাপ্তদের ১৯ জনের মধ্যে ৮ জন রয়েছেন, যারা মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে রঘুনাথগঞ্জের রেজাউল করিম ও শমসেরগঞ্জের আব্দুল ওয়াহব মোমিন। বিচারাধীন বন্দি হিসেবে চার বছর ধরে তারা জেলেই রয়েছে। রেজাউলের ভাই সেন্টু শেখ বলছেন, ‘‘দাদা আদালতে নিজেই তার দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। ফলে তার সাজা নিয়ে আমার বা পরিবারের লোকজনের কোনও বক্তব্য নেই।’’
এ দিকে শমসেরগঞ্জ থানার নামো চাচন্ড গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহব মোমিন ছিল পেশায় রাজমিস্ত্রি। ওই পরিবারের দাবি, খাগড়াগড় কাণ্ডে কী ভাবে তার নাম জড়িয়ে গিয়েছিল, জানা নেই। তবে ঘটনার আগে কয়েক বছর ধরে আচমকা ধর্মপ্রাণ হয়ে উঠেছিল। ঘটনার পরে পুলিশ বাড়িতে আসার পর জানা যায় মোমিন ওই ঘটনায় জড়িত। শুরুতে গ্রামবাসীরা সে কথা বিশ্বাস না করলেও সাজা ঘোষণার পরে গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘‘সে নিজেই যখন দোষ স্বীকার করছে, তখন বলার কী আছে!’’
ওই ঘটনায় জড়িয়েছিল বক্সিপুরের নুরুল হক মণ্ডলের নাম। হাওড়া থেকে এনআইএ গ্রেফতারও করেছিল তাকে। নুরুলের বাবা মাসাদুল মণ্ডলের দাবি, ‘‘বিশ্বাস হয় না নুরুল ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’’ লালগোলার মকিমনগরের মাদ্রাসার মালিক মোফাজ্জুল হোসেনের পরিবার আবার আদালতের রায় ঘোষণার পর থেকেই বাড়ির সদর দরজায় খিল দিয়েছেন। কারও সঙ্গে কোনও কথা বলছেন না তাঁরা।