বেহাল রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
মাত্র ৩০ কিলোমিটারের ব্যবধান। কিন্তু রাস্তা এতটাই খারাপ যে ওইটুকু পথ অতিক্রম করতে সময় লাগছে প্রায় দু’ঘণ্টা। অভিযোগ, কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কটি সারানোর জন্য বারবার আবেদন জানানো হলেও পূর্ত দফতরের কর্তাদের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। শুধু কান্দি-বহরমপুরের যোগাযোগ নয়, ওই রাস্তা বীরভূম জেলার সাথে যোগাযোগের অন্যতম রাস্তাও বটে। ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির পিচের চাদর উঠে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা নিত্যদিনের সঙ্গী।
কান্দি মহকুমা নিত্যযাত্রী সংগঠনের সদস্যরা জানান, মেরেকেটে মাত্র ৩০ কিলোমিটার লম্বা ওই রাস্তা পেরাতে খুব বেশি হলে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু বাস্তবে লাগছে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। সকাল ৮টার মধ্যে বাস না পেলে সকাল ১০টায় অফিস ধরা অসম্ভব। তাঁদের কথায়, একে তো রাস্তার অবস্থা বেহাল। তার মধ্যে উপরি হিসেবে জুটেছে যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। সংগঠনের সম্পাদক বাপি অধিকারী বলেন, “খানাখন্দে ভরা ওই রাস্তা এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। নিয়মিত দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। সকালে সুস্থ অবস্থায় বেরোলেও সন্ধ্যায় সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরতে পারব কী না তা নিয়ে সংশয় থাকে।’’ ‘‘সংগঠনের পক্ষ থেকে বহু বার পূর্ত দফতরে জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’’ —মত তাঁর।
কান্দি বহরমপুর রুটে প্রায় ১৫০টি বেসরকারি ও ৩৫টি সরকারি বাস যাতায়ত করে। বেহাল ওই রাস্তায় যানবাহন চালিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে গাড়ির মালিকদেরও। এক মালিকের কথায়, ‘‘একটি নতুন চাকা আট মাস পর্যন্ত চলে। কিন্তু রাস্তা খারাপের কারণে তিন মাসের বেশি টিকছে না।’’ কান্দি বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বহুবার রাস্তাটি মেরামত করার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এক বছর ধরে রাস্তাটি সংস্কারই হল না।’’
দু’টি শহর থেকে প্রায় হাজার দু’য়েক যাত্রী ওই রাজ্য সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। তা ছাড়াও নানা জরুরি কাজে কান্দি মহকুমার বহু বাসিন্দা সদর শহর বহরমপুরে যাতায়াত করেন। শুধু জরুরি কাজে নয়, বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টিকিৎসা করাতে কান্দি মহকুমার পাঁচটি ব্লক, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার বহু বাসিন্দা ওই শহরে চিকিৎসা করাতে ভীড় করেন। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার ব্যবসায়ীরাও ওই রাস্তায় যাতায়াত করেন। সব মিলিয়ে রাস্তাটির গুরুত্ব অনেক। তবুও কেন ওই রাস্তাটির সংস্কার হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।
রাস্তার বেহাল দশার কথা স্বীকার করেছেন পূর্ত দফতরের বহরমপুর ১ নম্বর বিভাগের বিভাগীয় আধিকারিক বীরেন্দ্রকুমার সিংহ। তিনি বলেন, “ওই রাস্তায় সংস্কারের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। তবে ওই রাস্তার কাজ পূর্ণাঙ্গ ভাবে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে সেটা শুরু করতে বছর খানেক লাগবে।’’