নিরাপত্তার দাবিতে পুরপ্রশাসককে স্মারকলিপি জঙ্গিপুর পুরসভার কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র।
দলে গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন জঙ্গিপুরের পুর প্রশাসক মোজাহারুল ইসলাম। আজ, মঙ্গলবারই নিজের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে খবর। এই আবহে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ জঙ্গিপুর পুরসভার কয়েক জন কর্মীর।
এ নিয়ে সোমবার তাঁরা পুর প্রশাসকের দ্বারস্থ হন। উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা না হলে পুর পরিষেবা বন্ধ রেখে ধর্না শুরু করার হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। নির্দিষ্ট কিছু হেনস্থার ঘটনার উল্লেখ করে এ দিন তাঁরা লিখিত অভিযোগ জানান পুর প্রশাসকের কাছে। গত কয়ে কদিন ধরে জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন এবং পুর প্রশাসক মোজাহারুলের অনুগামীদের মধ্যে মারপিট ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে জঙ্গিপুরে জোর আলোচনা চলছে কয়েক দিন ধরে। এই কোন্দলের প্রভাব পড়েছে জঙ্গিপুর পুরসভার কাজকর্মেও। পুরকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এই দ্বন্দ্বে একাধিক পুরকর্মীকে হেনস্থা করা হয়েছে। পুর ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাজের তদারকি করতে গেলে তাঁদের অপদস্থ করা হচ্ছে। অশালীন ভাষায় তাঁদের গালিগালাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রিত একদল ‘দুষ্কৃতী’র দাপটে পুরকর্মীরা আতঙ্কিত বোধ করছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসককে।
এ দিন পুর কর্মচারী সংগঠনের মুখপাত্র সাহিন হোসেন বলেন, “পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় পরিষেবার কাজ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে কর্মীদের। বাইরের রাজনৈতিক বিবাদের সঙ্গে পুরকর্মীদের কোনও সম্পর্ক নেই। অথচ কিছু লোকের চক্রান্তে পুরসভার ধারাবাহিক কাজকর্মে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। বহু কর্মচারীকে পুরসভার চত্বরে এসে কিছু বহিরাগত গালিগালাজ করছেন। হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।’’
সাহিন আরও বলেন, “পুর উন্নয়নকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে চক্রান্ত চলছে। এ রকম চলতে থাকলে পুর পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন শহরের মানুষ। এর সুরাহা যদি না হয়, তবে আমরা নিরাপত্তার দাবিতে ধর্নায় বসব। এমন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমরা স্বাভাবিক কাজ করতে পারছি না। এমন চললে আগামী দিনে পুর পরিষেবা অচল হয়ে পড়বে।”
জঙ্গিপুরের পুর প্রশাসক মোজাহারুল বলেন, “কর্মীরা নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কের কথা জানিয়ে সোমবার লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমি তাঁদের এই আতঙ্কের কথা পুলিশকে জানাব। পুর প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদেরও জানিয়ে তাঁদের হস্তক্ষেপ চাইব।” তিনি আরও বলেন, ‘‘জঙ্গিপুরের রাজনৈতিক পরিবেশ এমন ছিল না। আতঙ্ক বাড়ছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার আমি পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে নিরাপত্তা চাইব।’’