বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
দলের জয়ী ১৫ জন কাউন্সিলরকেই এক জায়গায় রাখা হচ্ছে। একসঙ্গে দল বেঁধে গিয়ে দলের ঘোষিত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আগামী মঙ্গলবার জঙ্গিপুরে পুরবোর্ড গড়বেন তাঁরা।
পুর নির্বাচনে দলের জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক শেষে রবিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানালেন তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন। জঙ্গিপুরে শূন্য থেকে ১৫টি আসন পাওয়ার বিষয়টি ‘গর্বের’ বলে উল্লেখ করে জাকির দাবি করেন, কোনও কাউন্সিলর শহর ছেড়ে যাননি। এ সবই রটনা।
জাকির রবিবার ওই দাবি করলেও জঙ্গিপুরে তৃণমূলের পুর নির্বাচন পরিচালনার মূল হোতা তথা জাকির-অনুগামী বলে পরিচিত জেলা পরিষদ সদস্য মন্টু রহমান দলীয় কাউন্সিলরদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, পূর্বতন তৃণমূল পুরকর্তাদের ঘনিষ্ঠরা সাত কাউন্সিলরকে ভুল বুঝিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে ‘অজ্ঞাতবাসে’ নিয়ে যান। তিনি তা জানতে পেরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষোভ মেটান। সেদিন রাতেই নিজে সঙ্গে করে কাউন্সিলরদের জঙ্গিপুরে নিয়ে আসেন।
এ দিন জাকিরের বাড়িতে হওয়া বৈঠকে হাজির ছিলেন জঙ্গিপুরে তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি খলিলুর রহমান। ছিলেন মন্টুও। বৈঠকের পর সমস্ত কাউন্সিলরকেই বিধায়কের রঘুনাথগঞ্জের বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। কাল, মঙ্গলবার এই বাড়ি থেকেই সরাসরি জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসকের অফিসে যাবেন কাউন্সিলররা। তবে দলের ১৪ জন কাউন্সিলর সেখানে থাকলেও ‘পারিবারিক কারণে’ সেখানে থাকতে রাজি হননি এক কাউন্সিলর। তিনি অবশ্য দলের নেতাদের জানিয়ে দেন, বোর্ড গঠনের আগে যথাসময়ে তিনি দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে দেখা করে নেবেন। এ দিন বৈঠকে হাজির না থাকলেও নব নির্বাচিত কাউন্সিলর তনুপমা নন্দর স্বামী তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর তৃণমূল নেতা বিকাশ নন্দ পরে বৈঠকের ঘরে ঢোকেন দলীয় নেতাদের অনুমতি নিয়ে। জেলা সভাপতি খলিলুর ও জাকিরের সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। সাংবাদিকদের সামনেই তিনি অভিযোগ করেন, “নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের বিভিন্ন কর্মসূচি ও দলীয় বৈঠকে ১৪ জনকে ডাকা হলেও এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে ডাকা হয়নি। আমি দলের নির্দেশের বাইরে কোনও কাজ করিনি কখনও। কিন্তু কাউকে বৈঠকে না ডাকা অপমানজনক। সেটাই করা হয়েছে আমাদের সঙ্গে।” জাকির বলেন, “সুষ্ঠু ভাবে পুরবোর্ড হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই সকলকে এক জায়গায় রাখছি। সেখান থেকে তাঁরা যাবেন একসঙ্গে। আপাতত পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান ঠিক হবে। পরে জেলা সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে বাকি পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ দলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি খলিলুর জানান, এ দিনের বৈঠকে পুরবোর্ড কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যে যে প্রকল্পে পুরসভায় অর্থ বরাদ্দ হবে, তার প্রকল্পভিত্তিক আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ ও তা কী ভাবে খরচ হয়েছে, প্রকাশ্যে তার হিসেব পুরবোর্ডকে জানাতে হবে বলে
ঠিক হয়েছে।