—প্রতীকী চিত্র।
বরাবরই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে চাহিদার তুলনায় রক্ত সরবরাহ কম থাকে। আর উৎসবের মরসুম হলে রক্তদান শিবির কমে যায়। যার জেরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কেও রক্তের আকাল দেখা দেয়। সেই সুযোগটাই নেয় রক্তের দালালেরা।
এ বারে শীত পড়তে উৎসবের মরসুম শুরু হয়েছে। যার জেরে রক্তের সঙ্কট বেড়েছে। আর এই সুযোগে টাকার বিনিময়ে দালালেরা সেখানে রক্ত বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে গত শনিবার রক্তদাতাদের একটি সংগঠন দু'জনকে রক্তের দালালির অভিযোগে বহরমপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পরে অবশ্য তারা থানা থেকে জামিন পেয়েছে। বহরমপুর থানার পুলিশের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বা অন্য কেউ অভিযোগ করেননি। ফলে ব্যক্তিগত বন্ডে থানা থেকে তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘চাহিদার তুলনায় রক্তের জোগান কম। যার জেরে বরাবরই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট রয়েছে। এই পরিস্থিতিকে কখনও কখনও দালালেরা কাজে লাগায়। তবে আমরা নিয়মিত নজরদারি চালাই। কোনও দালাল আমাদের নজরে এলেই আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিনা পয়সায় মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করা হয়। রক্তের জন্য কোনও অর্থ দিতে হয় না, এ কথা হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় লেখা রয়েছে। কোনও পরিষেবা দেওয়ার পরিকাঠামো না থাকলে আমরা রোগীদের বিষয়টা জানিয়ে দিই।’’ তাঁর আবেদন, ‘‘সকলেই রক্তদানে এগিয়ে আসুন। সেই সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে কারও কাছ থেকে রক্ত নিতে যাবেন না। ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না থাকলে দাতা এনে রক্ত নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’
রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত লালগোলার এক যুবক বলেন, ‘‘যেদিন থেকে রক্তের গ্রহীতার তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়বে, সে দিন থেকে রক্তের দালালি বন্ধ হবে। তাই সকলকে রক্তদানে যেমন এগিয়ে আসতে হবে তেমনই প্রশাসনিক নজরদারি বাড়াতে হবে।’’
মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের তুলনায় রক্তের চাহিদা বেড়েছে। ২০১৪-১৫ সালে বছরে ১৫-১৬ হাজার ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হত। গত কয়েক বছরে প্রায় ৩০ হাজার ইউনিটের আশপাশে রক্তে লাগছে। মেডিক্যালে চিকিৎসা পরিষেবা বেড়েছে। রক্তের চাহিদাও বেড়েছে।