নিজস্ব চিত্র।
এনআরসি আতঙ্কে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। পোস্ট অফিস খোলার আগেই হাজার মানুষের ভিড় জমেছে গেটের সামনে। একই ছবি ইসলামপুর থানার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনেও। রোজই সেখানে তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। ভিড়ের চাপে শেষে কাজ বন্ধ করতে হচ্ছে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের কর্মীদের।
অবস্থা সামাল দিতে পৌষের হাড় কাঁপানো শীতেও পুলিশকর্মীদের কপালে জমছে বিন্দু বিন্দু ঘাম। এ বার এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামল খোদ ইসলামপুর থানার পুলিশ। দিন রাত হাজারো হ্যাপা সামলে টেবিল চেয়ার নিয়ে পুলিশ কর্মীরা বসছে থানা চত্ত্বরে। সেখানে বসেই আধার কার্ড থেকে ভোটার কার্ড তৈরি এবং সংশোধন প্রক্রিয়া সহজ উপায়ে উতরে দিতে তৈরি করা হচ্ছে লম্বা তালিকা। লিখে নেওয়া হচ্ছে আবেদনকারীর নাম ফোন নম্বর থেকে ঠিকানা। এলাকার ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ছ’টি টেবিলে বসছেন সিভিক ভলান্টিয়ার্স থেকে পুলিশকর্মী। এক জন টানা চার ঘণ্টা করে করছেন সেই কাজ।
ইসলামপুর থানার লোচনপুর এলাকার বাসিন্দা, বাচ্চু সেখ বলছেন, ‘‘আর যাই হোক ভিড় আর গন্ডগোল থেকে বাঁচা গিয়েছে। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে খুব ভাল হয়েছে এই প্রক্রিয়ায়। ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের কর্মীদের সঙ্গেও ঝামেলা নেই।’’
পুলিশের দাবি, তালিকা পাঠানো হচ্ছে ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসে। তালিকা ধরে ফোন করে নির্দিষ্ট সংখ্যার মানুষকে পাঠানো হবে সেখানে। ইসলামপুর থানার ওসি আব্দুস সালাম সেখ বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত। বিশেষ করে আধার কার্ড তৈরি নিয়ে শুরু হয়েছে বিশৃঙ্খলা। প্রায় দিনই পোষ্ট অফিস আর স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে গন্ডগোল করছে বিভ্রান্ত মানুষ। ফলে আমরা একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজটা করতে চাইছি। এতে এক দিকে যেমন গন্ডগোল কমবে, কাজটাও সহজেই করতে পারবেন ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের কর্মীরা।’’ পুলিশের আরও দাবি, নাম নথিভুক্ত করার সময় একটি সাদা কাগজে লিখে দেওয়া হচ্ছে নম্বর। সেই নম্বর-সহ তালিকা তৈরি করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কে। কে কবে কোথায় যাবেন সেটা ফোন করে বলে দেওয়া হবে থানার পক্ষ থেকে। ফলে বিশৃঙ্খলার আর কোনও সম্ভাবনা থাকবে না সেখানে।’’ আধার কার্ড হারিয়ে গেলে তার পুনরায় প্রিন্ট বা সংশোধন এবং ভোটার কার্ড সংশোধন কারার সময় কম্পিউটার সেন্টারে গিয়ে যাতে সাধারণ মানুষকে বেশি পয়সা দিতে না হয় তার জন্য ওই থানা উদ্যোগী হয়েছে।