প্রতীকী ছবি
ভাষা দিবসকে আঁকড়ে রাজনীতি ঘটনা নতুন নয়। কখনও মূর্তি উন্মোচন কখনও বা ভাষা দিবস পালন— ডান কিংবা বামপন্থীদের মধ্যে টানাপড়েন বাম আমলেও ছিল। পালা বদলের পরে সে লড়াইয়ে শামিল হয়েছে তৃণমূল, এমনই অভিযোগ বিরোধীদের।
আবুল বরকতের জন্মভিটে সালারের বাবলা গ্রামে তাই তাঁর আবক্ষ মূর্তি থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলের ইচ্ছায় শুক্রবার ফের একটি নতুন মুর্তির উন্মোচন হল শুক্রবার। ফিতে কেটে তার উন্মোচন করে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘‘বলা গ্রাম বরকত সাহেবের জন্মভিটে, এ বার এই গ্রামে পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে পথবাতি, যাত্রী প্রতিক্ষালয় এবং বাবলা থেকে কলকাতা সরকারি বাস চালু হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রামের রাস্তায় পথবাতির কাজ শুরু হবে।”
যা শুনে জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, ‘‘ভাষা দিবসেও শাসক দলকে উন্নয়নের খেসারত দিতে হচ্ছে। আসলে বরকত সাহেবের অবদান কিংবা ভাষা দিবসের তাৎপর্য বুঝতে গেলে একটু খোঁজখবর নিতে হয়। তৃণমূলের নেতারা সেটুকুও নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না।’’
সেই সঙ্গে, স্থানীয় গ্রামবাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন, বরকতের মূর্তি থাকা সত্ত্বেও একই জায়গায় আরও একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে রাজ্য সরকার ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন?
তৃণমূলের অন্দরের খবর, যে মূর্তিটি বাবলা গ্রামে রয়েছে, সেটি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল বছর কয়েক আগে। তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী ওই মূর্তিটির উন্মোচন করেছিলেন।
দলের এক নেতা বলেন, ‘‘সে মূর্তিতে মালা পড়িয়ে কী করে শ্রদ্ধা জানাবেন পরিবহণ মন্ত্রী?’’ তাই নতুন আবক্ষ মূর্তি বসল বাবলায়।
ভাষা দিবস উদযাপন কমিটির প্রধান পৃষ্টপোষক তথা ভরতপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ আজাহারুদ্দিন সিজারের সাফাই, “বরকত সাহেবের মূর্তিটির নীচে কংগ্রেস সাংসদ অধীরের নাম লেখা আছে। তাই সরকারি ভাবে একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজন ছিল। এখানে রাজনীতির কিছু নেই।”
রাজনীতির ঘোঁট আগেও পেকেছে বাবলায়। বাম আমলে বরকতের জন্মভিটে বাবলা গ্রামে কংগ্রেস ভাষা দিবস পালন করলে পাল্টা জবাব দিত সিপিএম।
গত তিন বছর ধরে ভাষা দিবস পালন করছে তৃণমূল। কিন্তু এ বার মূর্তি বসিয়ে সেই রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল তারা বলে মনে করছেন বিরোধীরা।