Jalangi

জলঙ্গিতে দলের মধ্যেই দ্বন্দ্বে চিন্তায় তৃণমূল

জলঙ্গির বিধায়ক তৃণমূলের আব্দুর রাজ্জাক এবং তার বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর লড়াই একেবারে চরমে উঠেছে। যার ফলে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বেশ কিছুটা চাপে শাসক দল।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

জলঙ্গি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২২ ০৮:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

পদ্মা পাড়ের জলঙ্গি এক সময় লাল দুর্গ বলে পরিচিত ছিল এই জেলায়। কিন্তু গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেখানেও প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনেও বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে তারা। কিন্তু বিধানসভার পর থেকেই গোষ্ঠী কোন্দল গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসক দলের।

Advertisement

তা ছাড়া বিরোধীরাও অনেকটাই রুখে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে সেখানে। বিশেষ করে সিপিএম নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করে মাঠে নেমে পড়েছে বেশ কিছুদিন আগে। কিছুদিন আগে বাম ছাত্র সংগঠনের সমাবেশে রীতিমতো ভিড় জমিয়ে চমক দিয়েছে তারা। অন্যদিকে ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে শাসক দলের নেতাদের একাংশ দাবি করছে, গোষ্ঠিকন্দল যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে হারানোর জন্য বিরোধীদের দরকার হবে না।

জলঙ্গির বিধায়ক তৃণমূলের আব্দুর রাজ্জাক এবং তার বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর লড়াই একেবারে চরমে উঠেছে। যার ফলে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বেশ কিছুটা চাপে শাসক দল। যদিও জলঙ্গির বিধায়ক বিরোধী মুখ বলে পরিচিত জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ওরফে রকি অবশ্য সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। তার দাবি, ‘‘কোথাও কোনও গণ্ডগোল নেই। এ সব বিরোধীদের সাজানো কথাবার্তা। আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। সকলে মিলে একসঙ্গে লড়াই করা হবে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতিও শুরু করেছি আমরা।’’

Advertisement

বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল একেবারে হাটে হাড়ি ভেঙেছেন গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে। তাঁর সরাসরি দাবি, ‘‘দলের পক্ষ থেকে যে ভাবে গোষ্ঠী কোন্দল তৈরি করা হয়েছে জলঙ্গিতে তার প্রভাব গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে কোনও সন্দেহ নেই। যারা বিধানসভা নির্বাচনে বুক চিতিয়ে নির্বাচন করেছে, তাদেরকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে যারা দল বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল তাদেরকেই সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।’’ ফলে কেবল বিরোধীরা নয়, খোদ তৃণমূল বিধায়কের কথা থেকেই পরিষ্কার শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল বিপদ ডেকে আনবে তৃণমূলের। তবে বিরোধীদের দাবি, কেবল গোষ্ঠী কোন্দল নয়, পঞ্চায়েতে আকাশছোঁয়া দুর্নীতির অভিযোগও শাসক দলকে সমস্যায় ফেলবে।

কিন্তু শাসক দল যদি গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতোই কৌশল নেয়, পুলিশ যদি আবারও শাসকদলের পাশে দাঁড়িয়ে নির্বাচন করে? জলঙ্গির পোড় খাওয়া সিপিএম নেতা, প্রাক্তন বিধায়ক ইউনুস সরকার বলছেন, ‘‘এ বার যদি লাঠি দিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করে তৃণমূল, তা হলে লাঠি দিয়েই প্রতিরোধ করা হবে। পুলিশ যদি ওদের পাশে না থাকে, তা হলে কিছুই দরকার হবে না আমাদের। আর যদি পুলিশ পাশে দাঁড়িয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করে তাহলে পাল্টা লাঠি ধরতে হবে মানুষকে।’’ আর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, ‘‘গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি একটি রাজনৈতিক দল এ ভাবে গণতন্ত্রের গলা টিপে মারবে।’’

তৃণমূল যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement