পুরভোটের ময়দানে একেবারে সম্মুখ সমরে দুই বাম শরিক—সিপিএম বনাম আরএসপি!
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভায় মোট ১৭টি আসন রয়েছে। তার ১৫টিতে প্রার্থী রয়েছে সিপিএমের। দু’টি আসনে রয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী। তা সত্ত্বেও দলীয় প্রতীকে সাত্যকী সরকারকে পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করেছে আরএসপি। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী উজ্জ্বল রায়কে সমর্থন করছে তারা। মুর্শিদাবাদের অন্য পুরসভাগুলিতে যখন ‘বাম ঐক্য’ হয়েছে, এখানে হল না কেন? আরএসপি-র জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব, “আসন বণ্টনের সময়ে পুরসভায় অন্তত একটা ওয়ার্ডে দলের প্রার্থী রাখার দাবি জানিয়েছিলাম। শুধু সিপিএম রাজি হয়নি। তাই দলের অস্তিত্ব রাখতে বাধ্য হয়ে পুরভোটে প্রার্থী রাখা হয়েছে।”
আরএসপি নেতৃত্বের অভিযোগ, পুরসভায় একটি আসনও না দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান সিপিএমের শঙ্কর মণ্ডল! তা শুনে বিশ্বনাথবাবুর নাম না নিয়ে শঙ্কর মণ্ডলের জবাব, “উনি প্রবীণ নেতা! তিনি ভাল করেই জানেন ফ্রন্ট তৈরি হয় জেলাস্তরে। ফলে আমি দায়ী নই।”
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের ১ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের প্রার্থী পান্থ গোস্বামী। তিনি জিয়াগঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদকও। তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শরিক দলের প্রার্থী সাত্যকী সরকারও। ২০০০ সালের পুরনির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আরএসপি-র প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন সাত্যকীবাবু। সে বার তিনি হেরেছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থীর কাছে। তবে বামফ্রন্টের দুই শরিক দলের কাজিয়ায় ফায়দা তুলতে নেমে পড়েছে তৃণমূল। বিষয়টিকে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক নির্মল দত্ত। তিনি বলেন, “পুরভোটে বামফ্রন্টের কোনও প্রার্থী নেই তো! রয়েছে শঙ্কর মণ্ডলের ফ্রন্ট। আমরা মানুষের কাছে গিয়ে বিষয়টি বলছি। শঙ্কর নিজেকে জিয়াগঞ্জের রূপকার বলে পরিচিয় দিলেও আমরা ভোটারদের কাছে আর্থিক দুর্নীতি-সহ নানা বিষয় তুলে ধরছি।” পুরসভায় এ বার আমরাই জিতব বলছেন এই তৃণমূল নেতা।
সাফাইকর্মীদের বিক্ষোভ। ভোটের মুখে মুর্শিদাবাদ পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের বেতন বন্ধ হওয়া নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মাস দু’য়েক ধরে পুরসভার ওই কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। সোমবার কিছু কর্মীকে নিয়ে মিছিল করে তৃণমূল। লালবাগ শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিত্ ধর মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন। বর্তমান কাউন্সিলর তথা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কংগ্রেসের বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “লালবাগের মহকুমা শাসকের নির্দেশে ট্রেজারি ওই কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না। এতে পুরসভার কোনও গাফিলতি নেই।’’ জেলা তৃণমূলের সম্পাদক সন্দীপ রায়ের দাবি, ‘‘অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে। ফলে গবীর সাফাইকর্মীদের পেটের ভাতে টান পড়ছে। তাই পথে নেমেছি।’’