Durga Puja 2022

পুজো দেখবেন ক্যানসারজয়ী

উত্তরে প্রাণখুলে হাসেন নারায়ণ দাস। বছর চারেক আগে মুখে তীব্র যন্ত্রণায় হাসতেও অসুবিধা হত। ক্যানসার হয়েছিল মুখেই। বড় একটা ফোঁড়া থেকে দগদগে ঘা ছড়িয়ে পড়েছিল মুখজুড়়ে।

Advertisement

অমিত মণ্ডল

নদিয়া শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৮
Share:

প্রতিমার সামনে নারায়ন দাস ঠাকুর।

তিনি যে বাঁচবেন, অনেকেই ভাবতে পারেননি। তাতে অবশ্য বছর বাষট্টির নারায়ণ দাস ঠাকুরের জীবনে ফেরার জেদ একটুও কমেনি। তিনি লড়েছেন ক্যানসারের সঙ্গে এবং জিতেছেন। কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা নারায়ণ দাস ঠাকুরকে দেখে পরিচিত অনেকে এখনও চমকে উঠে বলে, ‘‘ঠাকুর আপ জিন্দা হো!’’

Advertisement

উত্তরে প্রাণখুলে হাসেন নারায়ণ দাস। বছর চারেক আগে মুখে তীব্র যন্ত্রণায় হাসতেও অসুবিধা হত। ক্যানসার হয়েছিল মুখেই। বড় একটা ফোঁড়া থেকে দগদগে ঘা ছড়িয়ে পড়েছিল মুখজুড়়ে। জন্মসূত্রে বাঙালি না হয়েও এই রাজ্য, বাঙালি আর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে আপন করে নিয়েছিলেন সেই কবে থেকে। রোগের জন্য চার-চারটে বছর সেই দুর্গাপুজো থেকে দূরে থাকতে হয়েছিল। তাতেই লড়়াইয়ের জেদটা বেড়েছিল। আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেই হবে, আনন্দ-হাসি ফেরাতে হবে, উৎসবে ভাসতে হবে প্রিয়জনের সঙ্গে—এই লক্ষ্যে লড়েছেন।

অবশেষে চার বছর বাদে দুর্গাপুজোয় তিনি রোগমুক্ত। মাঝে কয়েক বছর পুজোর আনন্দ থেকে দূরে থাকার জন্য অসম্ভব আক্ষেপ রয়েছে কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের প্রাক্তন শ্রমিক নারায়ণের। জানালেন, সব আক্ষেপ এ বার আনন্দ করে পুষিয়ে নেবেন। ঠিক করেছেন, প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখবেন। তর আর সইছে না তাঁর। তাই এখন মাঝেমধ্যেই চলে যাচ্ছেন পটুয়াপাড়ায়। মুম্বাইয়ের টাটা হাসপাতালে চিকিৎসা চলেছিল তাঁর। ২০১৮ সালে অগস্ট মাসে অস্ত্রোপচার হয় ন’ঘণ্টা ধরে। মুখের বাঁ দিক অনেকটা কেটে বাদ দিতে হয়। ২৬ দিন পর টাটা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি আপাতত রোগমুক্ত। তবে ওষুধ এখনও চলেছে। চেকআপের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর-পর পাড়ি দিতে হয় মুম্বইয়ে। এ বারও যাবেন পুজোর পর।

Advertisement

কল্যাণী পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা ৫৪ বছরের কদমী বাড়ুই যেমন হয়। ক্যানসারে এখন প্রায় শয্যাশয়ী তিনি। গত অগস্ট মাসে জড়ায়ুতে ক্যানসার ধরা পড়ে। কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। ঠিক পুজোর সময় অক্টোবর থেকে কেমো শুরু হওয়ার কথা। পুজোর দিনগুলিতে পরিবারের সঙ্গে হইহই করার স্মৃতি এখন খুব বেশি করে মনে পড়ে। কান্না জড়ানো গলায় বলেন, “খুব একটা ভাল নেই। জানি না কী হবে।” তবে পরিবারের আশা, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আগামী বছর পুজোয় আবার সকলের সঙ্গে ঠাকুর দেখবেন, অঞ্জলি দেবেন। মা দুর্গা সব ঠিক করে দেবেন। নিজস্ব চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement