হাসপাতালে জখম শিক্ষক দিলীপ ঘোষ। বুধবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
শিক্ষক দিবসে পড়ুয়ারা ইউনিফর্ম পরে স্কুলে আসবে কি না, তা নিয়ে বিতর্কের জেরে পড়ুয়াদের সামনেই এক শিক্ষককে ধরে স্কেল-পেটা করার অভিযোগ উঠল হাঁসখালির ভৈরবচন্দ্রপুর হাইস্কুলে। গুরুতর জখম অবস্থায় স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক দিলীপ ঘোষকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শিক্ষক দিবসের আগে এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁরা স্কুলে বিক্ষোভ দেখাতে পারেন।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক দিবসে পড়ুয়ারা কী পোশাক পড়বে, তা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। স্কুলেরই এক বাংলার শিক্ষক প্রস্তাব দেন, ছাত্রেরা আসবে জিনস আর পাঞ্জাবি পরে আর ছাত্রীরা শাড়ি পড়ে। আপত্তি করেন দিলীপ। তিনি বলেন, মেয়েদের সকলের শাড়ি পরে আসার দরকার নেই। যারা শিক্ষিকা সাজবে, তারাই কেবল শাড়ি পরে আসুক। ছেলেদের জিনস পরে আসা নিয়েও তিনি আপত্তি করেন।
স্কুলের একটি সূত্রের দাবি, পঞ্চম পিরিয়ডের পর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সেই সময়ে এক বাংলার শিক্ষক আচমকা সকলের সামনে দিলীপের গালে সপাটে চড় কষিয়ে দেন। বাকি শিক্ষকেরা কিছু বোঝার আগেই ওই শিক্ষক এবং চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মী মিলে দিলীপকে মারতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। বাংলার শিক্ষক মোটা কাঠের স্কেল দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে থাকেন বলে অভিযোগ। চেঁচামেচি শুনে পড়ুয়ারা ছুটে এসে শিক্ষকদের মারপিট দেখতে থাকে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘আমরা পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়েছিলাম। কোনও কিছু বোঝার আগেই দিলীপবাবুকে মোটা স্কেল দিয়ে মারা হতে থাকে। কোনও মতে আমরা গিয়ে ঠেকাই। পড়ুয়াদের সামনেই এক জন শিক্ষক আর এক শিক্ষককে মারছেন দেখে লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছিল।” হাসপাতালে শুয়ে দিলীপ বলেন, “সামান্য কারণে এ ভাবে আমাকে পড়ুয়াদের সামনে মারধর করবে, সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। কোনও কিছু নিয়ে মতপার্থক্য হতেই পারে। কিন্তু এ ভাবে মারবে?” বারবার ফোন করেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন বিশ্বাসকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। জেলার মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক ব্রজেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, “এমনটা ঘটে থাকলে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।” তবে রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।