জখম: সেই শিশু। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে বেরনোর ছলে তাঁকে যে শেষতক খুন করে ফেলা হবে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি তাঞ্জিরা বিবি (২৭)। এমনকী তাঁদের বছর পাঁচেকের ছেলেকেও যে থেঁতলে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল নাসিম শেখের তাও টের পাননি তিনি।
সোমবার রাতে সে বাবেই স্ত্রী-পুত্রকে ইট দিতে ক্ষতবিক্ষত করে উধাও হয়ে গিয়েছে নাসিম। তবে। তা়্জিরা আঘাত সগ্য করতে না পেরে মারা গেলেও ছেলে নাসিবুল বেঁচে গিয়েছে। তার কথার ভিত্তিতেই পুলিশ এখন খোঁজ করছে কালিয়াচকের নাসিম শেখের।
সোমবার সন্ধ্যেয়, ফরাক্কা স্টেশন লাগোয়া রেললাইনের তাঞ্জিরার দেহ মেলে। শিশু পুত্রটিও মারা গেছে ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল সে। তবে, জ্ঞান পেরার পরে ওই ছেলেটিই রাস্তায় উঠে এসে ঘটনাটি সবাইকে জানায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাকে ভর্তি করিয়েছে ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
নাসিবুল জানায়, তার আব্বা নাসিম শেখ, কী ভাবে মাকে পাথর দিয়ে মেরেছে। জানিয়েছে, বাবার সঙ্গে আরও এক জন ছিল। তবে তাকে সে চেনে না। শিশুটির এই জবানবন্দির ভিত্তিতেই প্রাথমিক তদন্তে নেমেছে ফরাক্কা থানা ও রেল পুলিশ। কিন্তু খুনের মামলা রুজু করবে কে রেল পুলিশ না থানা তাই নিয়ে টানাপড়েনে ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও খুনের কোনো মামলাই রুজু করা হয়নি।
তবে ইতিমধ্যেই আহত শিশুটিকে নিয়ে গিয়ে মঙ্গলবার দুপুরেই কালিয়াচক থেকে একদফা ঘুরে এসেছেন রেল পুলিশ। কিন্তু শিশুটির ঠিকানা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বেনিয়াগ্রাম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসে শিশুটি জানায়, সোমবার দুপুরে বাসে ফরাক্কায় এসে নামে তারা তিন জন। রাস্তার পাশেই নিউ ফরাক্কা স্টেশনে সন্ধ্যে পর্যন্ত বসে বাবা তাদের নিয়ে লাইন ধরে হাঁটতে শুরু করে। তার পর অন্ধকার লাইন-পাড়ে পাথর দিয়ে হঠাতই আক্রমণ করে মাকে। সেই সময়ে আরও এক জন জুটে যায়। বাবার সঙ্গে সেও পেটাতে থাকে। পুলিশকে সে জানায়, বড় একটা পাথর দিয়ে মারতেই তার মা পড়ে যান। এরপর তাকেও পাথর দিয়ে মেরে গলা টিপে ধরলে সে মাটিতে পড়ে যায়।
শিশুটির কথামত, কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফেরে তার। সে আস্তে আস্তে রেললাইনের পাশের সড়কে নেমে আসে। সেখানে সড়কের ধারে বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে। সেখানেই খুলে বলে সব। নাসিমের খোঁজ শুরু হয় তার পরেই।