রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার।
দলে সাম্প্রতিক রদবদলে বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি পদে এসেছেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। রাজ্যস্তরে পদ পাওয়ার পর জেলায় দলের অন্দরে রানাঘাটের সাংসদের প্রভাব আরও কিছুটা বাড়বে নাকি একই সঙ্গে নতুন কোনও সমীকরণ তৈরি হবে সে দিকেই তাকিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহল।
বিজেপির নদিয়ার সংগঠন সাংগঠনিক জেলায় ভেঙে দেওয়ার পর নদিয়া দক্ষিণ সাংঠনিক জেলার প্রথম সভাপতির দায়িত্ব পান জগন্নাথ সরকার। একদা সঙ্ঘের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসা ফুলিয়া বিদ্যামন্দির স্কুলের শিক্ষক জগন্নাথকে গত লোকসভা ভোটে রানাঘাটে প্রার্থীও করে দল। বিপুল মার্জিনে তৃণমূলে একদা দুর্গে জয় পান জগন্নাথ। সাংসদ হওয়ার মাস কয়েক পরেই জগন্নাথের বদলে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানবেন্দ্রনাথ রায়কে সভাপতির দায়িত্ব দেয় দল। এর আগে যখন নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে ছিলেন তখন থেকেই জেলায় দলের সংগঠনে নিজের কর্তৃত্ব বিস্তার করতে সচেষ্ট ছিলেন জগন্নাথ। এ বার দলের অন্দরেও গুরুত্ব বৃদ্ধি পেল জগন্নাথের। সে ক্ষেত্রে জেলায় তাঁর শিবিরের দিকেই এবার পাল্লা ভারী হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিজেপি সূত্রের খবর, দলের অন্দরে জগ্ননাথ বিরোধী অংশও রয়েছে। এতদিন নানা সময়ে জগন্নাথ বিরোধীরা জেলা সভাপতি হওয়ায় তাঁদের কিছুটা হলেও ডানা ছাটার চেষ্টা হয়েছে বলেই দাবি দলের একাংশের।
কিছু দিন আগেই ইস্তফা দেন দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তী। এর আগে বার কয়েক ইস্তফা দেওয়ার পর রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে কাজে ফিরেছিলেন অশোক। তবে এ বার আর তাঁকে পদে ফেরানোর উদ্যোগ দেখা যায়নি।
বরং সম্প্রতি জেলার সভাপতি পদে বসানো হয়েছে বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি দলের অন্দরে অশোকের কট্টর বিরোধী বলেই পরিচিত। আবার তাঁর সঙ্গে জগন্নাথের সম্পর্ক যথেষ্টই ভাল। কাজেই সে দিক থেকেও জগন্নাথ শিবিরই বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। পাশাপাশি এতে অশোকের সভাপতি পদে ফেরার পথেও কাঁটা পড়ল বলে মনে
করা হচ্ছে।
কিন্তু দলের অন্যরা তাঁকে কতটা সহযোগিতা করবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ অনেক জায়গায় পার্থ বা জগন্নাথের বিরোধী শিবিরের লোকেরা পদে আছেন। যদিও পার্থসারথী বলছেন, “কারও সঙ্গেই কোনও সমস্যা নেই। সকলকে নিয়েই কাজ করতে চাই। এ ভাবেই এগোচ্ছি।”
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, রাজ্যস্তরে বড় পদ পেলেও জেলার রাজনীতি নয় সাংগঠনিক ভাবে জগন্নাথকে এখন রাজ্যস্তরে বা দল অন্য জেলায় যে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেবে তা পালন করতে হবে বলে দাবি দলের একাংশের। কাজেই এই জেলায় যে সাংগঠনিক ভাবে খুব বেশি সময় দিতে পারবেন এমন নাও হতে পারে বলে দাবি কোনও কোনও মহলের।
জগন্নাথ নিজে বলছেন, “আমাকে দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করেছি। জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি এতদিন। সাংগঠনিক দায়িত্বও পালন করব।”