সাগরের মৃত্যুর কারণ অজানাই

বাবার অভিযোগ পেয়ে তিন সহপাঠীর নামে সরাসরি খুনের মামলা রুজু করেছে হরিণঘাটা থানা। কিন্তু পুলিশেরই একটি সূত্রের দাবি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইসার) ছাত্র সাগর মণ্ডল আত্মঘাতী হয়েছেন বলে ময়নাতদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০২:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাবার অভিযোগ পেয়ে তিন সহপাঠীর নামে সরাসরি খুনের মামলা রুজু করেছে হরিণঘাটা থানা। কিন্তু পুলিশেরই একটি সূত্রের দাবি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইসার) ছাত্র সাগর মণ্ডল আত্মঘাতী হয়েছেন বলে ময়নাতদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে দেহাংশের নমুনা ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।

Advertisement

নদিয়ার মোহনপুরে আইসার-এর হস্টেলে একটি অব্যবহৃত শৌচাগারে সাগরের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গিয়েছিল সোমবার বিকেলে। সকাল থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন, পরীক্ষা দিতেও যাননি। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পরে দেহ গ্রামে ফিরতেই তা রাস্তায় রেখে অবরোধ করেন এলাকার মানুষ। দাবি ওঠে, খুনিদের সাজা দিতে হবে।

বুধবার আইসার-এর ক্যাম্পাসে গিয়ে পুলিশ সাগরের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে। এক সহপাঠী জানান, দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল সেমেস্টার শেষ হলে আর হস্টেলে থাকবেন না বলে সাগর তাঁকে জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হস্টেলে থাকতে তাঁর নানা রকম অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু কী অসুবিধা, তা তিনি বলতে পারেননি।

Advertisement

সাগরের বাবা, ফতেপুর গ্রামের দিনমজুর সুশান্ত মণ্ডলের অভিযোগ, তফসিলি কোটায় আইসার-এর মতো কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ায় সাগরকে টিটকিরি শুনতে হত। ঠাট্টা করা হত ইংরেজিতে দুর্বলতা নিয়েও। যে তিন জনের বিরুদ্ধে তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছেন, তাদের সঙ্গে এ দিন কথা বলেছে পুলিশ। মাঝেমধ্যেই সাগরকে হেনস্থা করত, এমন এক সহপাঠীকে চিহ্নিতও করা হয়েছে।

তবে জাত তুলে অপমানের জেরে সাগর আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে একটা মহল যে সন্দেহ করছে, তাতে খুব একটা জোরালো যুক্তি আছে বলে করছে না পুলিশ। কেননা যে তিন সহপাঠীর বিরুদ্ধে সাগরের বাবা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের এক জন নিজে তফসিলি জাতির, এক জন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি), তৃতীয় জন শুধু সাধারণ শ্রেণিভুক্ত।

মৃত্যুর কারণ হিসেবে পড়ার চাপ বা খারাপ ফল করলে বৃত্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার ভয় সাগরকে পেয়ে বসেছিল, এমন সন্দেহেরও সারবত্তা খুঁজে পায়নি পুলিশ। আইসার-এর রেজিস্ট্রার জয়দীপ শীল জানান, সাগর ভাল ছাত্র ছিলেন। তা হলে ঠিক কী কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন সাগর? পুলিশ সদুত্তর দিতে পারেনি।

সাগরের দিদি রেখা বলেন, ‘‘সোমবার পরীক্ষা থাকায় রবিবার রাতে ফোনে ভাই বেশি কথা বলেনি। সে আত্মহত্যা করতে যাবে কেন?’’ রেজিস্ট্রার জানান, তাঁদের গড়া তদন্ত কমিটির সদস্যেরাও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা রিপোর্ট দিলেই তা মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠানো হবে। আজ, বৃহস্পতিবার এসএফআই নেতৃত্ব সাগরের বাড়ি যাবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement