বিয়ের বেশে কাজল। নিজস্ব চিত্র।
খবরটা এল বিয়ের আসরেই। সবে কাজি এসে বিয়ে পড়া শুরু করেছেন। পাত্র ধুলিয়ান শহরের দিঘরি পল্লির বছর একুশের কাজল শেখ। পাত্রী পাশেই কাঁকুড়িয়া গ্রামের রিঙ্কি খাতুন। বিয়ে বাড়ি জুড়ে চলছে আনন্দ, উৎসব। আর ঠিক তখনই মোবাইলটা বেজে উঠল। ফোনটা এসেছে বন্ধু আলাউদ্দিনের কাছ থেকে। রক্তদান শিবির হচ্ছে ডাকবাংলো মোড়ে। তাই তোকে আসতে হবে রক্ত দিতে।
কাজলের যে শনিবার বিয়ে জানা ছিল না বন্ধুর। বন্ধুকে আশ্বস্ত করলেন কাজল। বললেন, “বিয়ে তো কী? বিয়ের কাজ শেষ করেই যাচ্ছি।”বিয়ে বাড়িতে তখন শোরগোল পড়েছে বেশ। এ কী কাণ্ড? বিয়ের আসর ছেড়ে কেউ এ ভাবে ছোটে রক্ত দিতে?
সব অস্বস্তি কাটাতে এগিয়ে এলেন পাত্রের দাদু হাজিবুল্লা শেখ। দাদু বললেন “ওকে যেতে দাও। শুভদিনে শুভকাজ মঙ্গলের। অন্যকে জীবন দান করেই শুরু হোক না নতুন জীবন।”
স্বামীর মুখের দিকে চেয়ে আছেন সদ্য বিবাহিতা বিস্মিত স্ত্রী রিঙ্কি। থমকে দাঁড়িয়েছে বিয়ের উৎসব। সম্মতি দিয়ে স্ত্রী রিঙ্কি বললেন “সাবধানে যান।”বাইক নিয়ে বরযাত্রী এসেছিল বন্ধু আসমাউল। তারই বাইকে চড়ে রক্তদান শিবিরে যখন পৌঁছোলেন তখন তার বিয়ের সাজ দেখে সবার চোখে মুখেই বিস্ময়। পেশায় রং মিস্ত্রি কাজল বলছেন, ‘‘রক্তের সঙ্কটের কথাটা জানি। তাই প্রথম রক্তদানের সুযোগটা যখন পেলাম তখন কাজে লাগালাম। সম্মতি দিয়েছেন স্ত্রীও।”