অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), হুমায়ুন কবির (ডান দিক)। — ফাইল চিত্র।
সোমবার বিকেলে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ডোমকল। সিপিএমের কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষে চার জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তৃণমূলের দাবি, চার জনই শাসক দলের সক্রিয় কর্মী। তাঁদের চররা গুলি লেগেছে। সিপিএমের দাবি, তৃণমূল কর্মীদের ছোড়া বোমায় বাম কর্মীরা আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই আজ, মঙ্গলবার ডোমকলে রোড-শো করতে আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দিনই বহরমপুরে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের সভা ডাকা নিয়ে প্রকাশ্যে এসে পড়েছে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হুমায়ুনের দাবি, ‘‘আমাকে ডোমকলের কর্মসূচিতে ডাকা হয়নি। আমি যাব না।’’ তবে সম্প্রতি হুমায়ুনের সঙ্গে দলের জেলার আর যে তিন বিধায়ক প্রার্থী বাছাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে রবিউল আলম চৌধুরী ও আব্দুর রাজ্জাক অভিষেকের কর্মসূচির ডাক পেয়েছেন ও সেখানে যাবেন বলে জানিয়েছেন। আর এক বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খানের কন্যা জানিয়েছেন, তাঁর মা অসুস্থ বলে যেতে পারবেন না।
হুমায়ুন সোমবার ফের দলের জেলা সভাপতি শাওনি সিংহরায়কে আক্রমণ করেছেন। তবে শাওনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শাওনি বলেন, ‘‘বিধায়কের প্রসঙ্গে রাজ্য নেতৃত্ব যা বলার বলবেন।’’ তবে এ দিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জেলায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ওকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলব এগুলি থেকে বিরত থাকা ভাল। কারণ আমাদের লড়াইটা ভারতে বিজেপির বিরুদ্ধে। আমি বড় না তুমি বড় এই ব্যক্তিগত ইগোর সময় নয় এখন। গোটা ভারতবর্ষকে বাঁচাতে হবে। পঞ্চায়েত ভোট থেকে সেটা শুরু হবে। পঞ্চায়েতে যদি ভোট ভাগ করে দিই তা হলে বিজেপির সুবিধা হবে।’’
জেলা জুড়ে রাজ্য তৃণমূলের একাধিক নেতা পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার করছেন। ফিরহাদ দু’দিন ধরে জেলায় প্রচার করছেন। পাঁচ দিন ধরে প্রচার করছেন মন্ত্রী সিদ্দিকুলা চৌধুরী। তার পরেও পঞ্চায়েত ভোটে দলের অন্দরের ক্ষোভ বাইরে চলে আসায় তৃণমূল নেতৃত্ব বেশ অস্বস্তিতে। এই ক্ষোভ কি ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলতে পারে, এমন প্রশ্ন দানা বেঁধেছে দলের নিচু তলার কর্মী ও প্রার্থীদের মনে। যদিও ভরতপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সাধারণ মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। এমন ঘটনায় ভোট বাক্সে কোন প্রভাব পড়বে না।” হুমায়ুনও বলেন, “ভোটে প্রভাব পড়বে না। লড়াইটা দলের জেলা সভানেত্রী ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ভোটে যাঁরা নির্দল, তাঁরাও তো তৃণমূলেরই লোক।’’