টানা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কখনও পুলিশকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় শিরোনামে জায়গা করেছেন, কখনও আবার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে শিরোনামে এসেছেন, তার থেকেও বড় বিষয় নিজের ও দলনেত্রীর জন্মদিন পালন নিয়ে আয়োজন করে শিরোনামে উঠেছেন। যেটা নিয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল ভরতপুরের বিধায়ক তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর। কিন্তু রাজ্য জুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে কোভিড। তার জেরেই ৩ জানুয়ারি হুমায়ুনের ৫৯ তম জন্মদিন ও ৫ জানুয়ারি দলনেত্রীর ৬৭ বছরের জন্মদিন পালনের সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে। রবিবার রাজ্য সরকার করোনাভাইরাস রোধ করতে নতুন করে ‘কড়া’ বিধিনিষেধ জারি করেছে। তারপরেই হুমায়ুন সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে ২ মে ভোটে জয়ী হওয়ার পরেও এলাকার দলীয় নেতা ও কর্মিদের নিয়ে আনন্দ অনুষ্ঠান করতে পারেননি হুমায়ুন। তাই নিজের জন্মদিনে ভরতপুর ১ ব্লকে প্রায় পাঁচ হাজার দলীয় কর্মীদের নিয়ে নিজের ৫৯ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ৫৯ কেজির পাঁচ তলা কেক সঙ্গে ৫৯ কেজি ছানার তৈরি ছানাবড়া –সহ ভাত, ডাল, পাঁচ তরকারি, মাছ ও মাংসের ঝোলের আয়োজন করে নিজের জন্মদিন পালন করা ব্যবস্থা করেছিলেন হুমায়ুন। এ ছাড়াও এলাকার প্রায় সাতশো জন দুঃস্থ মানুষের বিনা পয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা থেকে কম্বল ও চাদর বিতরণের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু সে সব কিছুই বালিত করতে হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিধায়কের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে প্যান্ডেলের কাজ শুরু হয়েছিল, শক্তিপুর থেকে আনাজিপাতি চলে এসেছে ভরতপুরে। মুদির দ্রব্যসামগ্রী থেকে কোনও কিছুই আর বাকি নেই। কেক ও ছানাবড়ার তৈরির কাজও প্রায় শেষ। হুমায়ুন বলেন, “আমার জন্মদিন নিয়ে দলের কর্মী সমর্থকরা উৎসাহিত ছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস রোধ করতে অনুষ্ঠান ছোট করতে হয়েছে। মানিক্যহারের নিজের বাড়িতে সন্ধ্যায় আমার জন্মদিন পালন করবো।”
অন্য দিকে দলনেত্রীর ৬৭ তম জন্মদিনের জন্য ছয়তলার ৬৭ কেজি কেক ও ৬৭ কেজি ছানার ছানাবড়া আয়োজন হয়েছে। ৫ জানুয়ারি দলনেত্রীর জন্মদিনে ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রের সালারের পিএইচই-র ময়দানে দিনটি পালন করার কথা ছিল। সেখানে দশ হাজার দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের খাবার ব্যবস্থা সঙ্গে দুঃস্থদের চাদর ও কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে জেলার জেলা শাসক থেকে পুলিশ সুপার ও জেলার সরকারি আধিকারিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু আচমকা করোনাবিধি জারি হওয়ার কারণে বন্ধ বন্ধ হয়েছে। বিধায়ক বলেন, “আমি দলের শৃঙ্খলবদ্ধ কর্মী, আমাদের সরকারের নির্দেশ অমান্য করে কন ভাবেই জমায়েত করে অনুষ্ঠান করা যাবে না। আমাদের নেত্রীর জন্মদিন সালারে পালন করা হবে।” হুমায়ুন জানান নির্ধারিত ৬৭ কেজির ছ’তলা কেক ও ছানা বড়া থাকবে, ওই আয়োজনে পরিবর্তন হবে শুধু লোক জমায়েতে।