(বাঁ দিকে) মলয় ঘটক এবং হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে থাকছে না বিধায়ক মনোনীত কোনও নির্দল প্রার্থী। মুর্শিদাবাদে ব্লক ও জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বিধায়কদের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ‘এক আসন এক প্রার্থী’ নীতিই বজায় রাখল তৃণমূল। প্রয়োজনে প্রত্যাহার করা হবে বিধায়ক অনুগামীদের মনোনয়ন। রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে টানা বৈঠক সেরে এমনটাই জানালেন ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুনের সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রায় একই কথা বলতে শোনা গেল বাকি তিন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ককেও। অন্য দিকে, বৈঠক থেকে বেরিয়ে মলয় বললেন, ‘‘মঙ্গলবারের মধ্যে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’
মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের অন্দরেই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে টিকিট বিলিতে অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগে ‘বিক্ষুব্ধ’ হন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সঙ্গী হন জেলার আরও তিন তৃণমূল বিধায়ক— রবিউল আলম চৌধুরী, শাহিনা মমতাজ এবং আব্দুর রজ্জাক। গত বৃহস্পতিবার বেলডাঙায় তৃণমূলের দলীয় অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের ওই চার বিধায়ক। দলীয় নেতৃত্ব ও দলের সিদ্ধান্তের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেন তাঁরা। দলীয় প্রতীক না পেলেও তাঁদের মনোনীত প্রার্থীদের ‘নির্দল প্রার্থী’ হিসেবে লড়ার বার্তা দেন বিদ্রোহীরা। ওই দিনই আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত হয় সেই খবর। খবর পৌঁছয় রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শুক্রবার ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের বিধায়ক মনোনীত গোঁজ প্রার্থী নিয়ে চিন্তা বাড়ছিল দলীয় নেতৃত্বের। বিধায়ক ও জেলা সভানেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে রফাসূত্র বার করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয়কে। বহরমপুরের একটি বেসরকারি লজে সোমবার বিকেলে মলয়ের নেতৃত্বে চার বিধায়ক, জেলা সভানেত্রী ও জেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে শুরু হয় বৈঠক। দীর্ঘ আলোচনা শেষে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন বিধায়কেরা ও মলয়। বৈঠকের পর অনেকটাই সুর নরম ‘বিদ্রোহী’দের। দলীয় প্রার্থীকে সমর্থনের ইঙ্গিত শোনা গেল তাঁদের গলায়। বেশ কয়েক জন বিধায়ক-অনুগামীকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল, এমনটাই তৃণমূল সূত্রের দাবি।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন বলেন, “আমাদের সমস্ত অভাব-অভিযোগ মলয় ঘটক ধৈর্য ধরে শুনেছেন। আর কোনও নির্দল প্রার্থী থাকছে না। নির্দিষ্ট ফর্মুলায় রফাসূত্র বেরিয়েছে।” রবিউল বলেন, “আমাদের পরিবারের যে সমস্ত টিকিট জেলা সভাপতি বাতিল করেছেন সেগুলো নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। আমরাও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছি।” মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় বলেন “কিছু সমস্যা ছিল সেগুলি মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে দলের সিদ্ধান্ত প্রত্যেকে মানতে বাধ্য।”