Jiaganj

সন্তানের জন্ম দিয়ে পরীক্ষা দিলেন ওকিয়া, সঞ্চিতা

মঙ্গলবার রাতে জিয়াগঞ্জ সুরেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সঞ্চিতা মণ্ডল প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন।

Advertisement

প্রদীপ ভট্টাচার্য

জিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ০৭:০২
Share:

অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন পরীক্ষায় বসেন দুই পরীক্ষার্থী। প্রতীকী চিত্র।

উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও জেলার সার্বিক চিত্রটা একটু ভিন্ন। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের অনুপস্থিতির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এর মধ্যে জেলার দুটি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন পরীক্ষায় বসেন, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, সেখানে সন্তান প্রসবের পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানান পরীক্ষার্থী। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশি পাহারায় স্কুলের শিক্ষিকার উপস্থিতিতে তাঁরা পরীক্ষা দেন।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে জিয়াগঞ্জ সুরেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সঞ্চিতা মণ্ডল প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। সে দিন রাতে তিনি সন্তানের মা হন। তাঁর পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল জিয়াগঞ্জ বীরেন্দ্র সিং সিংহি উচ্চ বিদ্যালয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় তিনি সব ধরনের শারীরিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে বুধবার দর্শনশাস্ত্র পরীক্ষা দেন।

গত বৃহস্পতিবার একই ঘটনা ঘটে শেখালিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী মালতিপুরের বাসিন্দা ওকিয়া খাতুনেরও। তাঁর পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল লালগোলা এমএন অ্যাকাডেমি উচ্চ বিদয়ালয়ে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে লালগোলা কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। সেদিন রাতে তিনি সন্তান প্রসব করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় হাসপাতালে তাঁর পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

জেলার বিভিন্ন স্কুলের তথ্য অনুযায়ী করোনার পরবর্তী সময় থেকে স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সেই প্রবণতাটা অধিক। এ প্রসঙ্গে শেখালিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সাহিন শেরাফি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে ৩০২ জন ছাত্রীর নাম রেজিস্ট্রেশন থাকলেও সেখানে পরীক্ষার জন্য আবেদনপত্র জমা করেছিল ২২৩ জন ছাত্রী। একই ভাবে ছাত্রদের নাম রেজিস্ট্রেশন ছিল ১৫৩ জনের, সেখানে পরীক্ষায় বসেছে ১১৮ জন।” এত জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘এলাকার ৯০ শতাংশ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এর মধ্যেও বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পড়াশোনার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী।” একই চিত্র ভগবানগোলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের। সেখানে ৩২০ জন ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন থকলেও পরীক্ষায় বসেছে ২৪৯ জন ছাত্রী। লালগোলা এম এন অ্যাকাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬২ জন অনুপস্থিতির মধ্যে ৪৫ জন ছাত্রী। নবগ্রাম সিঙ্গার উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বসেননি ২০ জন ছাত্রছাত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement