কম্বল চাইতেই রেগে গেল নার্স

কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় হাড় হিম হয়ে যাওয়ার সামিল। হাসপাতালের বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে ছিলেন এক রোগিণী। জানালেন, বাড়ি থেকে লোক এলে রেহাই মিলবে। গায়ে দেওয়ার মতো একখানা কম্বল জুটবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪২
Share:

বাড়ির কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে এক রোগিণী। — নিজস্ব চিত্র

কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় হাড় হিম হয়ে যাওয়ার সামিল। হাসপাতালের বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে ছিলেন এক রোগিণী। জানালেন, বাড়ি থেকে লোক এলে রেহাই মিলবে। গায়ে দেওয়ার মতো একখানা কম্বল জুটবে।

Advertisement

কান্দি মহকুমার পাঁচটা ব্লক হাসপাতালেরই এক অবস্থা। শুধু ব্লক নয়, তালিকাতে রয়েছে মহকুমা হাসপাতালের নামও।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও ডাক্তারের অভাবে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই চিকিৎসা করছে তো কোথাও শয্যা নেই। শেষে হাসপাতালের মেঝেতেই ঠাঁই মিলছে রোগীর। এরই মধ্যে শীত উপলক্ষে সমস্যার তালিকায় নতুন সংযোজন। —রোগী ভর্তি করলে বাড়ি থেকে চাদর-কম্বল দিতে হবে। হাসপাতালে ও সব বাড়ন্ত। অগত্যা, তাই করতে হচ্ছে রোগীর পরিবারকে।

Advertisement

খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালই যেমন। ৬০টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু দিন দিন রোগীর চাপে শয্যা বাড়তে বাড়তে দাঁড়িয়েছে ১২০। সে তুলনায় চিকিৎসক কিংবা নার্সের সংখ্যা বাড়েনি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই হাসপাতালে ১৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু আছেন মাত্র ছ’জন। তার মধ্যে এক জন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। ৪০ জন নার্স থাকার কথা। আছেন মাত্র ৬ জন। ওই কর্মীদের নিয়ে যে শুধু গ্রামীণ হাসপাতালটি চালাতে হয়, তা নয়। ওই ব্লকের মধ্যে আছে আরও চারটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সপ্তাহে দু’দিন করে হাসপাতাল থেকে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে রোগী দেখেন চিকিৎসক। ফলে সে দিন আবার চিকিৎসকের অভাব দেখা দেয় খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে। ‘‘এর মধ্যে রোগীদের চাদর-কম্বল দেওয়ার কাজ কে সামলাবে?’’— প্রশ্ন স্বাস্থ্যকর্মীদের।

সাদল গ্রামের শঙ্করপুরের বাসিন্দা রবিউল শেখ বলেন, “হাসপাতালে যে চাদর-কম্বল দেয়, সেটা তো জানিই না। রোগী নিয়ে গেলে বাড়ি থেকেই নিয়ে যাই।”

একই চিত্র কান্দি মহকুমা হাসপাতালেও। দু’দিন ধরে ভর্তি রয়েছেন যুগশ্বরার বাসিন্দা সুন্দরী বায়েন। বললেন, “হাসপাতালে একটা কম্বল চাইতেই স্বাস্থ্যকর্মীরা দু’কথা শুনিয়ে দিল। শেষে যাও বা একটা কম্বল দিল, দুর্গন্ধে সেটা গায়ে দেওয়ার উপায় নেই।” খড়গ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিত্যানন্দ গায়েনের অভিযোগ, “রোগীরা অনেক সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার সময়, কম্বল বাড়ি নিয়ে চলে যায়। বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। তাতেই এই সমস্যা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement